Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বাধীনতার আনন্দে দিনভর মুক্তিযুদ্ধকে জানা


২৬ মার্চ ২০১৯ ১৭:১৯

ঢাকা: স্বাধীনতা দিবসে রাজধানীর অভিভাবকরা তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে ছুটছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত বিভিন্ন স্থাপনা বা জাদুঘরে।

রাজধানীতেই রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকে জানার বেশ কয়েকটি স্থান। এগুলো হলো-মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, স্বাধীনতা জাদুঘর ও সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে। এসব জায়গাতেই এবার শিশুদের আরও গভীরভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে। জানানো হয়েছে ইতিহাস। কেউ কেউ গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন স্বাধীনতার মর্মকথা। কেউবা মেতেছিল চিত্রাঙ্কণসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজন করা হয়েছে সমরাস্ত্র প্রদর্শনীর। সেখানে সব বয়সী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রদর্শনীতে ঢুকতে সকালে দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। পাশেই আগারগাঁওয়ে বিমান বাহিনী জাদুঘরেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। দর্শনার্থীরা ঢুকছিলেন দলবেঁধে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরেও ছিল একই চিত্র। দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানী ছিল প্রায় ফাঁকা। দেখা যায়নি যানজটের চিরচেনা চিত্র।

দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা জাদুঘরে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। শিশু থেকে সব বয়সী মানুষের চোখেমুখে দেখা গেছে আনন্দের ছাপ। কেউ কেউ মেতে উঠেছিল সেলফি উৎসবেও।

শিশু সন্তান আদ্র ও ওয়াসীকে নিয়ে স্বাধীনতা জাদুঘরে এসেছিলেন বাসাবোর বাসিন্দা মহিউল। ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন নিদর্শন। আনন্দ উদযাপনের মুহূর্তে সময় বন্দি করছিলেন স্থিরচিত্রে। সারাবাংলাকে মহিউল বলেন, স্বাধীনতা উপলব্ধি করার দিন আজ। আজকের এই ক্ষণ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আরও গভীরভাবে জানার। আগামী প্রজন্মকে তা জানানোর। তাই ছেলেদের নিয়ে এসেছি। স্বাধীনতা জাদুঘরে রাখা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও নিদর্শনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি ছেলেদের। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্মল বাতাসে ঘুরে তারাও বেশ আনন্দিত।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্নালোড়ন বাংলাদেশ নামের একটি স্বোচ্ছাসেবী সংগঠন পথশিশুদের নিয়ে এসছিল স্বাধীতা জাদুঘরে। মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে জানানো হয়েছে ওই শিশুদেরও। সংগঠনটির পক্ষে ৮০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে হয়েছে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতাও।

সংগঠনটির কর্মী মাহাবুব সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের দুটি শাখা রয়েছে। সেখানকার ৮০ জন পথশিশুকে নিয়ে আমরা এখানে এসেছিলাম। সকালে তাদের মধ্যে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা হয়েছে। পরে স্বাধীনতা জাদুঘরে রাখা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর তাদের ঘুরে দেখানো হয়েছে।

জাদুঘর ঘুরে দেখার সময় পথশিশু শারমিন আক্তার সারাবাংলাকে জানায়, আগে কখনও তার এখানে আসা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের নির্যাতন ও নিপীড়নের ছবি দেখে তার ভেতরে কষ্ট অনুভব হচ্ছে বলেও জানায় সে। আরেক শিশু সামিয়া আক্তার জানায়, স্বাধীনতা জাদুঘরে এসে তার ভালো লাগছে। স্বাধীনতার অর্থ জানতে চায় এই শিশু। বুঝতে চায় কীভাবে অর্জন হয়েছে দেশের স্বাধীনতা।

শিশু সন্তান রাজ্যশ্রী সাহাকে নিয়ে স্বাধীনতা জাদুঘরে এসেছিলেন সুশান্ত সাহা ও মৌ দম্পত্তি। আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাজ্যশ্রী জাদুঘরে রাখা আলোকচিত্র ঘুরে ঘুরে দেখছিল। বাবা-মা ছবিগুলোর সঙ্গে তাকে আরও গভীরভাবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন।

রাজ্যশ্রীর মা মৌ সাহা সারাবাংলাকে বলেন, মেয়ে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় আজ প্রথম হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে মেয়ের বক্তৃতা করার কথা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে আরও গভীরভাবে পরিচয় করিয়ে দিতেই মেয়েকে এখানে নিয়ে আসা।

কী ছবি এঁকে প্রথম হয়েছ জানতে চাই রাজ্যশ্রী জানায়, পতাকা হাতে দুই শিশুর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর ছবি এঁকে সে পুরস্কার পেয়েছে। জাদুঘরে এসে বঙ্গবন্ধু, ২৫ মার্চের গণহত্যা, ২৬ মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিরোধ আর স্বাধীনতা অর্জনের মুহূর্তগুলো ছবিতে সে নতুন করে অনেক ইতিহাস জানতে পেরেছে।

দুপুরে পর নগরী রাস্তাঘাটের সর্বত্র ভিড় বাড়তে শুরু করে। সবখানেই দেখা গেছে স্বাধীনতা উদযাপনের রেশ।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএমএন

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্বাধীনতা জাদুঘর স্বাধীনতা দিবস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর