ববি উপাচার্যের ‘কৌশলি’ বক্তব্যে পিছু হঠছেন না শিক্ষার্থীরা
৩০ মার্চ ২০১৯ ২১:৫৬
বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৩০ মার্চ) ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ কর্মসূচি ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইমামুল হক তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেও তা প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দুঃখ প্রকাশের নামে ভিসি কৌশলি বক্তব্য দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।
শনিবার প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করে যে দায়সারা বক্তব্য দিয়েছেন তা অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে দিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে এখন তা অস্বীকার করছেন। এখন বলছেন যে তার বক্তব্য নাকি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি সত্যকে আড়ালের চেষ্টা করছেন।
উপাচার্যকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চেয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা। তা না হলে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদ করায় তাদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে ওইদিন থেকেই ক্যাম্পাসে তার বক্তব্য প্রত্যাখান করে ক্ষমা চাওয়াসহ ১০ দফা দাবী আদায়ে বিক্ষোভ করে আসছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৭ মার্চ দিবাগত রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হল ত্যাগ না করার ঘোষণা দেন। সেইসঙ্গে উপাচার্যে পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করেন।
চলমান পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে ঢাকার কলাবাগানে বিশ্ববিদ্যাললে লিয়াঁজো অফিসে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভা থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইমামুল হক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তার বক্তব্য নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। সভা শেষে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় ভিসি’র উদ্ধৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ রুমির সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো ই-মেইল বার্তায় উপাচার্য বলেন, “২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির অনুষ্ঠানে আমার প্রদত্ত বক্তব্যের একটি বাক্যকে কেন্দ্র করে সস্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আমি এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই-আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করিনি বরং যারা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে বাঁধা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের এহেন কার্যক্রম রাজাকারসদৃশ মর্মে মন্তব্য করেছি। উক্ত ‘শব্দটি’ আমি কোনোভাবেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলিনি। এরপরেও যদি আমার উক্ত বক্তব্যে কোনো শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, তবে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একই সাথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলমান রাখার স্বার্থে আমি সকল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি।”
সারাবাংলা/এসএমএন