ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ষষ্ঠ দিনেও বিক্ষোভ
৩১ মার্চ ২০১৯ ২৩:৩০
বরিশাল: শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে কটূক্তি করার অভিযোগে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. এস এম ইমামুল হকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩১ মার্চ) টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন তারা। এদিন মুখে কালো কাপড় বেঁধে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন।
রোববার ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের অংশ প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ‘প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক’ কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীরা কর্মসূচির অংশ হিসেবে রণসঙ্গীত, ব্যঙ্গ নাটিকা, কবিতা ও প্রতিবাদী গান পরিবেশন করেন।
এর আগে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং উপাচার্যের দুঃখপ্রকাশের কাগজের বিজ্ঞপ্তি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কেবল দুঃখপ্রকাশ করলে চলবে না। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া ও বক্তব্য প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ক্ষমা না চাইলে ভিসিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে বলেও তারা হুমকি দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে তারা তাদের দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে পৌঁছে দেবেন। এরপর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা তাদের পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
উল্লেখ্য, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদকে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান ‘পণ্ড করার পাঁয়তারা’ অভিহিত করে ববি উপচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার পাঁয়তারা করছিল। যারা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার চেষ্টা করে, তারা রাজাকার নয় তো কী? আন্দোলনকারীদের মধ্যে জামায়াত-শিবির ঢুকে গেছে এবং তাদের ইন্ধনেই কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনের নামে অরাজকতা করছে।’
উপাচার্যের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে তার পদত্যাগ চেয়ে ২৬ মার্চ থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন। এরই মধ্যে ২৮ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দিলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
ঘটনার ধারবাহিকতায় শুক্রবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাতে দুঃখপ্রকাশ করে উপাচার্য ড. এসএম ইমানুল হকের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে উপাচার্যের বক্তব্য ও আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য তার বক্তব্যের মাধ্যমে মিথ্যাচার করেছেন বলেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
সারাবাংলা/টিআর