Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্রলীগ কমিটির জন্য তালিকা চেয়ে শোভন-রাব্বানীকে ৭ দিন সময়


১৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৮:৪২

ঢাকা: ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য ৫০ জন করে মোট ১০০ জনের তালিকা দিতে সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে ৭ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।  বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদার বৈঠকে তাদের এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। বৈঠক সূত্র সারারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন।

তবে, নির্ধারিত বৈঠক শুরুর আগে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বের হয়ে যান। এছাড়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেনও নির্ধারিত বৈঠক শুরুর পর বের হয়ে যান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ৫০জন করে মোট ১০০ জনের তালিকা আগামী ৭দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে থাকা ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতেও বলা হয়েছে। এ সময় তারা দুজনেই ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে বলে জানান।

সূত্র জানায়, বৈঠকে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা জানান, তাদের নিজেদের মধ্যে আর কোনো ঝামেলা নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আজকালের মধ্যে তারা সাক্ষাৎ করে ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ার সুযোগও চেয়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা।  শেখ হাসিনা এই দুই নেতার সঙ্গে সাক্ষাতে রাজি হলে তাদের সেই সুযোগ দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে দীর্ঘসূত্রিতাসহ বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংগঠনিক নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।  শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে ছাত্রলীগের বর্তমান দুই সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, এরআগে গণভবনে আমাদের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠকে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন দলীয় সভাপতি। ওই বৈঠকে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে আমাদের চার শীর্ষ নেতাকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় শোভন-রাব্বানীর সঙ্গে আমরা বৈঠক করি।

এরআগে, গণভবনে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক এবং আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর এই চার নেতা গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন, সম্পাদক রাব্বানী

গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছাত্রলীগ নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। এরপর বুধবারও (১৭ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে ছাত্রলীগ নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগের তিন নেতা।  দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার সময় ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চৈত্রসংক্রান্তি ও বর্ষবরণের কনসার্ট অনুষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শনিবার (১৩ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং ডাকসুর এজিএস ও ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে দরবারে বসেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএ মোজাম্মেল, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগ ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।  দ্বিতীয় অধিবেশনের পর কমিটি ঘোষণার নিয়ম থাকলে শীর্ষ দুই পদে নেতৃত্ব নির্বাচনে সময় নেন সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছরের ৩১ জুলাই শেখ হাসিনা অর্পিত ক্ষমতাবলে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে ২ বছরের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন। এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।  বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনার পরদিন বুধবার  (১৭ এপ্রিল) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের সঙ্গে বৈঠকে ছাত্রলীগের যোগ্য এবং সক্রিয় নেতাকর্মীদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরির তাগিদ দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দুই তালিকা মিলিয়ে তৈরি করা হবে ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি। পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।

বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘তালিকা তৈরি করার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  আগামী ৭দিনের মধ্যে কমিটির তালিকা করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। তাদের মধ্যে এখন আর কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই।’ ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি এখন একাট্টা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমএনএইচ

আওয়ামী লীগ কমিটি ছাত্রলীগ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

সম্পর্কিত খবর