Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দলীয় সিদ্ধান্তে শপথ: ফখরুল


২৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:৫৯

ঢাকা: দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে বিএনপি দলীয়ভাবে সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘চেয়ারপারসানের সুচিকিৎসা, তার মুক্তি এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আমরা সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দলের চার প্রার্থীর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

আরও পড়ুন- শপথ নিলেন বিএনপির ৪ বিজয়ী, বাকি কেবল ফখরুল

নতুন এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। দেশের যারা রাজনীতি সচেতন ব্যক্তি আছেন, তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। কথা বলার পর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় তাকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সর্বময় ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। আমাদের গঠনতন্ত্রের ধারা অনুযায়ী তিনি সেই হিসেবে তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন এবং তারই প্রেক্ষাপটে আমাদের চার জন শপথ নিয়েছেন।’

এর আগে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুমতি পেয়ে সোমবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে শপথ নিতে সংসদে স্পিকারের কার্যালয়ে যান বিএনপির চার পার্থী মো. আমিনুল ইসলাম, হারুনুর রশিদ, উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ও মোশারফ হোসেন। বিকেল সাড়ে ৫টার কিছু পরে শুরু হয় শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা। পৌনে ৬টার আগেই শেষ হয় চার প্রার্থীর শপথ।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ফ্লোর পেয়েই খালেদার মুক্তি চাইলেন এমপি হারুন

চার প্রার্থীর মধ্যে মো. আমিনুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে, হারুনুর রশিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে, উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও মোশারফ হোসেন বগুড়া-৪ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন একাদশ নির্বাচনে। এই চার প্রার্থীর শপথের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির বিজয়ী ছয় প্রার্থীর মধ্যে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই কেবল শপথ নেওয়া থেকে বাদ থাকলেন।

শপথ গ্রহণ শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তেই আমরা শপথ নিয়েছি।’ পরে আরেক এমপি হারুনুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, সংসদকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আমরা সংসদে যোগ দিচ্ছি না, আমরা সংসদে যোগ দিচ্ছি জনগণের কথা বলতে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা শপথ নিয়েছি।

পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি বেশকিছু দিন পর আপনাদের সামনে এসেছি। আজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলব। আপনারা জানেন, আমাদের দলের চার জন, যারা নির্বাচিত ঘোষিত হয়েছিলেন, তারা আজ শপথ গ্রহণ করেছেন। এই বিষয়ে আমাদের দলের যে বক্তব্য, সেটা আপনাদের সামনে পরিষ্কার করে ব্যাখা করা এবং আমাদের দলের অবস্থান তুলে ধরার জন্য এখানে উপস্থিত হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘ভোটাধিকার, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে সংসদের কথা বলার সীমিত সুযোগ কাজে লাগিয়ে সংসদ ও রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াকে আমরা যুক্তিযুক্ত মনে করছি।’

বিজ্ঞাপন

তবে দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে দাবি করলেও সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিবের পাশে কেউ ছিলেন না। জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাসহ বিএনপিতে প্রায় ছয়শ কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন। তাদের একজনকেও দেখা যায়নি সংবাদ সম্মেলনে।

দলীয় সিদ্ধান্তে অন্যরা শপথ নিয়েছেন, আপনি নিচ্ছেন কবে?— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি কী করছি, না করছি, তা সময় হলেই জানতে পারবেন। অপেক্ষা করুন জানতে পারবেন।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা গত কয়েকদিন ধরে বলে আসছিলেন, শপথ নেওয়ার জন্য সরকার বিএনপির নির্বাচিত প্রার্থীদের চাপ দিচ্ছেন। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ওটা ছিল শপথ গ্রহণের আগের বক্তব্য। শপথ গ্রহণের ব্যাপারে আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই।’

একই প্রশ্ন বার বার করলে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘চাপ তো আছেই। গোট জাতিই তো চাপে আছে। তারা তো সবসময় সবাইকে চাপের মধ্যেই রেখেছে।’

শপথ গ্রহণ করায় সরকারকে বৈধতা দেওয়া হলো কি না?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লিখিত বক্তব্যে আমরা এটা ব্যাখা করেছি। কপি পাবেন।’

‘বিএনপি হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে’— ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রমের এমন মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেটা উনার বক্তব্য।’

শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হচ্ছে কি না?— জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘সমঝোতা কোথায় দেখলেন? এটা আমাদের পলিটিক্যাল সিদ্ধান্ত।’

আরও পড়ুন-

‘তারেকের নির্দেশেই শপথ’

শপথ নিলেন বিএনপির জাহিদ

ভাবছেন উকিল, অপেক্ষায় হারুন, নীরব আমিনুল

সিদ্ধান্তে অনড় বিএনপি, হাল ছাড়েননি উকিল-হারুন-আমিনুল

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অনুমতির অপেক্ষায় বিএনপির ৩ বিজয়ী

সারাবাংলা/এজেড/এটি/টিআর

ফখরুল বিএনপি শপথ সংসদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর