‘সিঁড়িতে শাওনের মৃতদেহ দেখে ভয়ে চলে যাই’
৯ মে ২০১৯ ২১:২৭
ঢাকা: রাজধানীর কাকরাইলে মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বাসার গৃহকর্মী রাশিদা বেগম আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলমের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। তবে এ সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় আদালত আগামী ১৬ মে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।
রাশিদা বেগম বলেন, ‘২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর হতে শামসুন্নাহার ম্যাডামের বাসায় সন্ধ্যার পর থালাবাসন পরিষ্কার ও রান্না করার জন্য মাসিক ১৬০০ টাকা বেতনে কাজে যোগদান করি। ১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় ম্যাডামের বাসায় কাজের জন্য আসি। বাসার কলিং বেল টিপলে ম্যাডাম দরজা খুলে দেয়। বাসায় প্রবেশ করে কী কাজ করব, তা ম্যাডামকে জিজ্ঞাসা করি। ম্যাডাম আমাকে রুটি বানানো, ভাত রান্না করা ও থালাবাসন পরিষ্কার করার কথা বলে তার রুমে চলে যান। ’
আরও পড়ুন: সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি কাকরাইলে মা-ছেলে হত্যা মামলার
তিনি বলেন, ‘আমি রান্নাঘরে প্রবেশের কিছু সময় পর কলিংবেল বাজলে আমি দারোয়ান এসেছে মনে করে দরজা খুলে দেই। তখন একজন মধ্যবয়সি লোক বাসার ভেতরে প্রবেশ করে ভাবী কোথায় জানতে চায়। আমি তাকে বলি ম্যাডাম ভিতরের রুমে আছে। লোকটি আমার কাছে পানি খেতে চায়। আমি পানির জন্য রান্না ঘরে ঢোকা মাত্র ওই লোকটি বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমি ভেতর থেকে দরজা খোলার জন্য ধাক্কাধাক্কি করি। কিন্তু খুলতে পারি না। এর মধ্যে ওরে বাবাগো বলে ডাক-চিৎকার শুনি। কিছু সময় পর বাসার দারোয়ান এসে রান্নাঘরের দরজা খুলে দেয়। আমি বাসা হতে দ্রুত বের হয়ে নিচে নামার সময় সিঁড়ির মধ্যে ম্যাডামের ছেলে শাওনের মৃতদেহ রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ভয়ে নিচে চলে যাই।’
আরও পড়ুন: কাকরাইলে মা-ছেলেকে হত্যা: ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর কাকরাইলের পাইওনিয়র গলির ৭৯/১ নম্বর বাসার গৃহকর্তা আবদুল করিমের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার করিম (৪৬) ও তার ছেলে শাওনকে (১৯) হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পরদিন রাতে নিহত শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় আব্দুল করিম, করিমের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তা, মুক্তার ভাই জনিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ওই তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আলী হোসেন। গত ৩১ জানুয়ারি তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
সারাবাংলা/এআই/এমএইচ