গুয়ানতানামো কারাগার খোলা চান ট্রাম্প
৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ১৪:৫৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কিউবায় অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত গুয়ানতানামো কারাগার খোলা রাখার জন্য এক নির্বাহী আদেশে সাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত বার্ষিক বক্তব্যে এ তথ্য জানান তিনি।
তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কারাগারটি বন্ধের জন্য এক অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। ট্রাম্পের কারাগার খোলা রাখার এ সিদ্ধান্ত ওবামা প্রশাসনের নীতির বিপরীত প্রতিক্রিয়া বলে মত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
১/১১’র সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্তদের শাস্তি দেয়ার জন্য মূল ভূখণ্ডের বাইরে কিউবায় এ কারাগার খোলে যুক্তরাষ্ট্র। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে প্রথম কয়েকজনকে অভিযুক্তদের পাঠানো হয়, যাদের কোনো বিচারের আওতায় আনা হয়নি। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও গঠন করা হয়নি।
বিচার ছাড়াই কাউকে আটক রাখার অভিযোগে শুরু থেকেই এ কারাগার মানবাধিকার সংগঠনগুলো তোপের মুখে আছে।
প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরে ওবামা গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি ২০০৯ সালে পরবর্তী এক বছরের মধ্যেই এ কারাগার বন্ধ করার এক আদেশে সাক্ষর করেন।
সে সময় ওবামা যুক্তি দেখিয়েছিলেন, দেশের আইনের আওতার বাইরে আসামিদের জন্য এ ধরণের ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার নিয়ে লড়া যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে দুর্বল করে দিবে।
ওবামা এক বছরের মধ্যে বন্ধ করার কথা বলেও পরর্বতী ৮ বছরেও সে নীতি সফল হয়নি। তবে এ কারাগারে আটক থাকা শত শত আসামীদের সরিয়ে নেওয়াসহ অনেককে মুক্তি দিতে সক্ষম হন তিনি।
হোয়াইট হাউজের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ক্যাম্পটি যাতে চালু রাখা হয় সে ব্যাপারে একটা অধ্যাদেশ সাক্ষর করেছেন ট্রাম্প। এছাড়াও অপরাধীদের যেন প্রশাসন সেখানে পাঠাতে পারে সে নিশ্চয়তাও দেওয়া হয়েছে।
কারাগারটি খোলা রাখার বিষয়ে ট্রাম্প যুক্তি দেখান, সন্ত্রাসীরা সাধারণ অপরাধী নয়। তারা বেআইনি যোদ্ধা। তাদের সঙ্গে তাদের মতোই আচরণ করা উচিত।
বুধবারের বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওমাবা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে পুনরায় মুখোমুখি হওয়ার জন্য অতীতে আমরা শত শত বিপজ্জনক সন্ত্রাসীকে মুক্তি দিয়েছি । এটি একটি নির্বোধ সিদ্ধান্ত ছিল।’- এ বক্তব্যের সমর্থনে তিনি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের প্রধান আবু বকর আল-বাকদাদির মুক্তি দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। যদিও আবু বকরকে ইরাকের মার্কিন সেনাবাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়েছিল।
গুয়ানতানামো কারাগারে বর্তমানে মাত্র ৪১ জন বন্দি রয়েছে। এ বন্দিশালা পরিচালনার বার্ষিক ব্যয় ৪৪০ মিলিয়ন ডলার।
সারাবাংলা/এসআরপি