Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষায় অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পেলেই সাজা’


১৬ জুন ২০১৯ ১৮:৪৮

ঢাকা: খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষায় অর্থ লেনদেন হলে জড়িত ব্যক্তিকে সোজা জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন আদালত। নিম্নমানের ৫২ পণ্য নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিকালে রোববার (১৬ জুন) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, আমরা অনেক সময় শুনতে পাই খাদ্যপণ্যের মান পরীক্ষার ফলাফল (টেস্টের রিপোর্ট) দেওয়ার আগে অর্থ লেনদেন হয়। আমরা এ রকম তথ্য-প্রমাণ যদি পাই তাহলে দুদকে নয়, সোজা জেলখানায় পাঠিয়ে দেবো। শুধু ৫২ পণ্য নয়, বাজারের একটি জিনিসও পিওর না। রমজান মাস এলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অথচ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কাজ সারা বছর অভিযান পরিচালনা করা।

বিজ্ঞাপন

আগে গ্রামে খাঁটি জিনিস পাওয়া যেত, এখন সেটাও নেই। এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে গ্রামেও অভিযান পরিচালনা করতে বলেন আদালত। ভোক্তারা যেন সহজে অভিযোগ জানাতে পারেন, তাই আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি হট লাইন সেবা চালু করার তাগিদ দেওয়া হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের দাফতরিক ফোন নম্বরটি (০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮) ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা; ছুটির দিনেও অভিযান পরিচালনা এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অধিদফতরের কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলেন আদালত।

এদিন নতুন করে ৯৩টি পণ্যের বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় সরকারি মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই)। নিম্নমানের ৫২টি খাদ্যপণ্যের পর দ্বিতীয় দফায় তালিকা জমা দিলো সংস্থাটি।

বিএসটিআই তালিকা দেওয়া পরে আদালত নিম্নমানের ৫২টি পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতে আদেশ দিয়েছিলেন। আদেশ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হককে তলব করেন আদালত। তার পক্ষে আইনজীবী নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে বলেন, আদালতের আদেশ আমরা যথা সময়েই বাস্তবায়ন করেছি, কিন্তু তা প্রতিবেদন আকারে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞাপন

এরপর আদালত কয়েকটি শর্তে মোহাম্মদ মাহফুজুল হকের বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুল নিষ্পত্তি করে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। পাশাপাশি প্রতিবেদন জমা দিতে আগামী ১৯ আগস্ট পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন।

রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম এবং সংস্থাটির চেয়ারম্যানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামাল উল আলম। বিএসটিআইয়ের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আর হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

সম্প্রতি ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ পরে মান পরীক্ষা করে বিএসটিআই। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের মান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৩১৩টির মধ্যে ৫২টি পণ্য মানহীন উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। সে সময় বাকি ৯৩টি পণ্যের মান পরীক্ষার ফলাফল প্রতিবেদন আকারে ১৬ জুনের মধ্যে আদালতে জমা দিতে বিএসটিআইকে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। দ্বিতীয় দফায় প্রকাশ করা ফলাফলে ৯৩টি পণ্যের মধ্যে ২২টি নিম্নমানের বলে উল্লেখ করা হয়।

গত ১২ মে এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ বাজার থেকে নিম্নমানের পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে আদেশ দেন। একইসঙ্গে ওই আদেশ বাস্তবায়ন করে ২৩ মে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলেন।

নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন জমা দেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদনে আদেশ বাস্তবায়নে নেওয়া পদক্ষেপের উল্লেখ না থাকায় সংস্থাটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়।

সারাবাংলা/এজেডকে/এটি

খাদ্যপণ্য খাদ্যের মান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বিএসটিআই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর