Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যাচাই বাছাই ছাড়াই অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন দিচ্ছে এনবিআর


৬ জুলাই ২০১৯ ০৮:১৪

ঢাকা: নতুন ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আইন বাস্তবায়নে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ থেকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন বা ইলেকট্রনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ই-বিআইএন) চালু করা হয়। কিন্তু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা কোনো ধরণের যাচাই বাছাই ছাড়াই প্রায় দেড় লাখের বেশি অনলাইন ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়ার পর অনিয়ম ধরা পড়লে সেদিনই বন্ধ করে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে, দুই মাস বিরতির পর আবারও যাচাই বাছাই ছাড়াই অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির একাধিক সূত্র সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্রটি বলছে, আগে ভ্যাট নিবন্ধন নিতে হলে একজন ব্যবসায়ীকে তার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ের দলিলাদি যেমন, ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন, এনআইডি নম্বর, ব্যাংকের হিসাব নম্বর এবং ব্যাংক লেনদেনের সার্টিফিকেট, টিন সার্টিফিকেট এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অন্যান্য দলিলাদি বিভাগীয় ভ্যাট অফিসে দাখিল করতে হতো। পরবর্তীতে ভ্যাট বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (সহকারি কমিশনার বা ডেপুটি কমিশনার) উক্ত দলিলাদি যাচাই-বাছাই করে এবং তার ব্যবসায়ের ধরণ সম্পর্কে অবহিত হয়ে তাকে ভ্যাট নিবন্ধন দিতেন।

বিজ্ঞাপন

এরপর ভ্যাট নিবন্ধন ডিজিটাল করতে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া শুরু হয়। আর অনলাইনে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে কোনো প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। আর এই সময়ে প্রায় দেড় লাখের বেশি অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এরপর অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধনে গলদের বিষয়টি ধরা পড়ায় এনবিআর চলতি বছরের ১৯ ফেব্রিুয়ারি থেকে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ করে দেয়।

শুধু তাই নয়, চলতি বছরের ২০ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে নিবন্ধন নিতে হলে তদারকি ছাড়া কোনো নিবন্ধন দেবে না বলে এনবিআর একটি নির্দেশনা জারি করে। সেই নির্দেশনা আড়াই মাসের মতো বহাল থাকলেও সম্প্রতি আবার কোনো ধরনের তদারকি ছাড়াই অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়া যাচ্ছে। এমনকি তদারকি ছাড়া আগেই ভ্যাট নিবন্ধন দিতে এনবিআর থেকে একটি নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।

ভ্যাট অনলাইন সূত্রে জানা গেছে, ভ্যাট নিবন্ধনের ওপর নির্ভর করে থাকে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা কেমন হবে। ফলে ভ্যাট অনলাইনের প্রজেক্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাই মনে করছেন, অনলাইনে ভুয়া ভ্যাট নিবন্ধন নেওয়ায় হাতছাড়া হয়েছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। যার কোনো হিসাব কারও কাছে নেই।

ভ্যাট অনলাইন আরও বলছে, ঠিকানা ভুল দেওয়া, ব্যাংক একাউন্টের তথ্য ভুল দেওয়া (ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট না থাকলেও তার তথ্য দেওয়া, ইআরসি (এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট) না থাকলেও তথ্য লিপিবদ্ধ করা, ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটি প্লান্ট না থাকা সত্ত্বেও ম্যানুফ্যাকচার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। ফলে, ভুল তথ্য দেওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সনাক্ত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। একই সাথে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব চলে গেলেও সেটা উদ্ধারেও ভ্যাট অনলাইনের কিছুই করার নেই।

এমন ভ্যাট নিবন্ধন বন্ধে চিঠি দিয়ে আবার নতুন করে তদারকি ছাড়া নিবন্ধন দিতে নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, যাচাই বাছাই ছাড়া নিবন্ধনের বিষয়ে আমরা জানতে পেরে এনবিআরকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করি। এরপর মাস কয়েক তদারকি ছাড়া নিবন্ধন দিতে কমিশনারেটগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর আবার তদারকি ছাড়া ভ্যাট নিবন্ধন দিতে এনবিআর থেকে নতুন করে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এখানে ভ্যাট অনলাইনের কিছুই করার নেই। এনবিআর এই বিষয়ে ভাল বলতে পারবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। খোঁজ নিয়ে তারপর বলতে পারব। এছাড়া, রাজস্ব হাতছাড়া হচ্ছে কিংবা রাজস্ব আহরণে সমস্যা হবে এমন কোনো বিষয়ে এনবিআর বিরূপ কোনো সিন্ধান্ত নেবে না।

সারাবাংলা/এসজে/জেএএম

অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন এনবিআর নিবন্ধন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর