শিশু সামিয়া হত্যা: আসামি হারুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
৮ জুলাই ২০১৯ ১৭:০৪
ঢাকা: রাজধানীর ওয়ারীতে সাত বছরের শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি হারুন অর রশিদ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিপির পুলিশ পরিদর্শক মো. আর্জুনের কাছে আসামি হারুন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন।
ছাদ দেখানোর নামে সামিয়াকে নেয় হারুন, ধর্ষণের পর রাখে রান্নাঘরে
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হবে বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।
এদিন বেলা ১টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়ে ৪টা ২৫ মিনিটে জবানবন্দিগ্রহণ শেষ করেন বিচারক।
এর আগে গত ৭ জুলাই রাজধানী থেকে হারুনকে গ্রেফতার করা হয়। হারুন ওই ভবনের সাত তলায় ভাইয়ের বাসায় থাকতেন। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বলে জানা গেছে।
মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, গত ৫ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শিশু সায়মা খেলাধুলার নাম করে মনির হোসেনের পাশের ফ্ল্যাটে যায়। সায়মার বাবা মাগরিবের নামাজ শেষে ছেলে-মেয়ের জন্য নাস্তা কিনে বাসায় ফেরে এবং তার মাকে মেয়ের কথা জিজ্ঞসা করেন। তখন সায়মার মা জানায় যে, পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশি মনিরের বাসায় খেলতে গেছে। সন্ধ্যায় আনুমানিক ৭টার সময় সামিয়া বাড়িতে ফিরে না আসায় আমার স্ত্রী সানজিদা আক্তার মনিরের বাসায় খুঁজতে যায়। মনিরের বাসায় না পেয়ে আমার স্ত্রী ফেরত আসে। এরপর আমি আমার স্ত্রী ও বড় মেয়ে ফারজানা প্রতিবেশি মনির ও তার স্ত্রীসহ বিল্ডিংয়ে সমস্ত যায়গায় খুঁজতে থাকি। নিচ তলা থেকে, আশেপাশের ফ্ল্যাটে না পেয়ে নবম তলায় খালি যায়গায় খুঁজতে যায়। নবম তলায় সব জায়গায় তালাবদ্ধ থাকে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর নবম তলায় উত্তর পাশের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখে ভেতরে প্রবেশ করে দেখতে পাই যে, আমার মেয়ের পায়ের স্যান্ডেল দুটি পড়ে আছে। সেন্ডেল দেখে আমাদের সন্দেহ হলো ভেতরে রুমে খুঁজতে থাকি।
এজাহারে আরও বলা হয়, খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে ওই ফ্ল্যাটের কিচেন রুমে সিঙ্কের নিচে গলায় শক্ত করে পাটের রশি দিয়ে পেঁচানো, মুখে রক্তাক্ত এবং পরনের হাফপ্যান্ট সামনের দিকে ছেড়া, রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পান তিনি। এরপর আমরা থানায় পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ এসে আমার মেয়েকে সিঙ্কের নিচ থেকে বের করে। এরপর ওয়ারী থানার পুলিশ আমার মেয়ের লাশের সুরতহাল প্রস্তুত ও ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। আমাদের ধারণা আমার মেয়ে মনিরের বাসা থেকে বের হয়ে আমার ফ্লাটে আসার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে কেউ নবম তলায় উত্তর পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটের উত্তর-পশ্চিমের কোনো রুমে নিয়ে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। এরপর সামিয়া গলায় শক্ত করে পাটের রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই রাত ৯টার দিকে রাজধানীর ওয়ারীর বনগ্রাম এলাকায় বহুতল ভবনের ৯ তলার খালি ফ্ল্যাট থেকে সামিয়া আক্তার সায়মার (৭) মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই ঘটনায় গত ৬ জুলাই দুপুরে সামিয়ার বাবা আব্দুস সালাম অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ওয়ারী থানায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ করে একটি মামলা দায়ের করে
সারাবাংলা/এআই/এমআই