Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কে বলেছে চোখের আলো না থাকলে স্বপ্ন দেখা যাবে না?


১ আগস্ট ২০১৯ ২২:৩৫

চোখের আলো না থাকলেও যে স্বপ্ন দেখা যায়, চেষ্টা আর অধ্যবসায়ে সেই স্বপ্নকে স্পর্শ করা যায়- সেটাই প্রমাণ করলেন চট্টগ্রামের ছাত্র মুহাম্মদ শাকিল খান। দৃষ্টিহীন এই তরুণ এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

শাকিল বলছিলেন, সারাজীবন স্বপ্ন দেখেছি, বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে কোনো সরকারি কলেজের শিক্ষক হবো। এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার পর মনে হল, আমার স্বপ্ন পূরণ হয়তো অসম্ভব হবে না। এই ফলাফল আমাকে আগামীর পথ চলতে সাহস ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শাকিলের স্বপ্ন পূরণের পথে তার সঙ্গী হয়ে এসেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, ইউএনডিপি, ইউএসএইডের মাধ্যমে পরিচালিত এ টু আই প্রকল্প। এ প্রকল্পের আইল্যাবের (ইনোভেশন ল্যাবের) উদ্ভাবন মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক সহযোগিতা করছে শাকিলের মতো বহু দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীকে।

এ টু আই এর এই উদ্যোগের কথা বলতে গিয়ে শাকিল বলেন, ‘এটুআই এর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এই মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক আসার আগে আমার শিক্ষা গ্রহণটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক পেয়ে আমার লেখাপড়া অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে। এমনও অনেক সময় হয়েছে, আমি শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছি, আমার মা এসে ডিভাইসটি নিয়ে গেছেন। এ টু আই এর এই উদ্যোগের কারণে আজ আমি বিশ্বাস করি- আমার স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব।’

শাকিলের মতোই আরেকজন দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থী সাইফউদ্দিন রাফি। চট্টগ্রামের পটিয়া সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে তিনিও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তারও পাঠজীবনের সবচেয়ে বড়সঙ্গী মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক। শুধু এইচএসসিই নয়, এসএসসি পরীক্ষায়ও টকিং বুকের সহযোগিতা নিয়ে তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

নিজের সাফল্যের পথে মাল্টিমিডিয়া টকিং বুকের অবদানের কথা বলতে গিয়ে রাফি বলেন, ‘আমি পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছি। জেএসসি থেকে আমার সঙ্গী হলো এ টু আই এর মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক। আজকে আমার সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান এ টু আই এরই। মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক পাওয়ার আগে আমার বোনেরা আমাকে পড়ে শোনাতেন। এরপর মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক আসায় এখন আমার জীবন অনেক বেশি সহজ হয়েছে।’

মাল্টিমিডিয়া টকিং বুকের উদ্ভাবক ও এ টু আই এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ভাস্কর ভট্টাচার্য নিজেও একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। নিজের আলোহীন জীবনের সংগ্রাম থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি উদ্যোগ নেন মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক তৈরির।

ভাস্কর বলেন, ‘আমার জীবনে লেখাপড়া করতে গিয়ে যে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছে, সেখান থেকেই আমার চিন্তায় এসেছিল মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক তৈরির। আমি চেয়েছিলাম, আমার মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যারা আছেন, তারা কেউ যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হোন। এটুআই এর স্বপ্ন একটাই- বাংলাদেশের সকল বই পড়ার সুযোগ সবাই যেন পায়। কেউ যেন দৃষ্টিহীনতার কারণে বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।’

সারাবাংলা/ওএম

এইচএসসিতে জিপিএ-৫ এটুআই দৃষ্টিহীন মানুষ মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক

বিজ্ঞাপন

সাগরে লঘুচাপ, কমছে তাপমাত্রা
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৩

ঢামেকে অভিযানে ২১ দালাল আটক
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:২০

আরো

সম্পর্কিত খবর