‘জরিমানা আদায়ে আর চালক-গাড়ির কাগজ জব্দ করা হবে না’
৪ আগস্ট ২০১৯ ১৪:২৭ | আপডেট: ৪ আগস্ট ২০১৯ ১৪:২৯
ঢাকা: এখন থেকে জরিমানা আদায়ের জন্য চালক ও গাড়ির কাগজপত্র জব্দ করা হবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, এখন থেকে চালক তার জরিমানার টাকা অন স্পটেই যেকোনো ব্যাংকের ডেবিট, ক্রেডিট, ভিসা, ক্যাশ, বিকাশ, রকেট ও অন্যান্য কার্ড ব্যবহার করে পরিশোধ করতে পারবেন।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে পথচারীর করণীয় শীর্ষক সচেতনতামূলক কর্মসূচী ক্যাশ কার্ডের মাধ্যমে ট্রাফিক প্রসিকিউশনের জরিমানা আদায় ব্যবস্থা উদ্বোধন করতে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অন স্পটে টাকা পরিশোধের ফলে চালক বা মালিক হয়রানি থেকে মুক্ত থাকবে। আগে এই টাকা আদায়ে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি হতো। দুই হাজার টাকা নেওয়া হলেও অল্প টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হতো। এখন সেটি আর হবে না। এর আগে ইউসিবিএল এর মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হতো। টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাগজপত্র আটকা থাকত। টাকা দিতে দেরি হলে আরও ভোগান্তি হতো। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কাগজপত্র পাঠানো হতো। ফলে নানা ধরণের বিড়ম্বনা ও হয়রানির শিকার হতে হতো। তাই, সেবাটাকে সহজ করতেই নতুন ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, এখন যেকোনো কার্ড ব্যবহার করে জরিমানার টাকা সাথে সাথে পরিশোধ করা যাবে। এখন থেকে কারও গাড়ির কাগজপত্র জব্দও করা হবে না আর কাউকে হয়রানির মুখেও পড়তে হবে না।
রেকারিংয়ের বিষয়ে কমিশনার বলেন, রং পার্কিং ও কাগজপত্র না থাকার কারণে গাড়ি রেকারিং করা হতো। রেকারিংয়ের জরিমানার টাকা কর্মকর্তারা হাতে হাতে নগদ হিসেবে নিতো। এখন থেকে নগদ টাকা নেওয়া হবে না। এটিও ই-ক্যাশের মাধ্যমে জমা নেওয়া হবে। নগদ টাকা লেনদেন হলে দুর্নীতি ও অসচ্ছতার সুযোগ থাকে।
দেশের সকল নাগরিক আইন মেনে চলবে এটাই প্রত্যাশিত জানিয়ে কমিশনার বলেন, একটি বিশেষ এলাকায় গেলে সবাই সোজা হয়ে যায়। জাহাঙ্গীর গেট পার হলেই শুরু হয় সবার আইন অমান্যের পালা। নো হেলমেট নো ফুয়েল এই শ্লোগানের কারনে আজ সবাই (চালক ও আরোহী) হেলমেট ব্যবহার করছে। উল্টো পথে যাওয়া কমেছে। এটি শুণ্যের কোটায় নিয়ে আসা দরকার। তবে সবাইকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পথচারীরাই একটি বড় সমস্যা। তারা ফোন কানে নিয়ে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হয়। বাচ্চা নিয়ে রোড ডিভাইডার পার হন। রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারায় গাড়ি থামানোর সংকেত দিতে দেখেছি। জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার করেন না। তাদের বিরুদ্ধেও এখন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য শুধু চালকদের দোষ দেওয়া যাবে না।
চালকদের বিষয়ে কমিশনার বলেন, এখন থেকে যদি কোনো চালককে মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাতে দেখেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক ও গাড়ি জব্দ করতে ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশ দিচ্ছি। কারণ মোবাইলে কথা বলা চালকরা অনেক প্রাণহানি ঘটিয়ে থাকেন।
এছাড়া রাস্তার বাম লেন খালি রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। কেউ বাম লেন দখল করে দাঁড়িয়ে থাকলে তাদের গাড়ি রেকারিংয়ের নির্দেশ দেন কমিশনার।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম মাসব্যাপী চলবে।