জৌলুস হারিয়েছে ঈদের ছবি, যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা
১৪ আগস্ট ২০১৯ ১৬:৫৪
বেশি নয়, বছর পাঁচেক আগেও দেশের সিনেমা হলে ঈদ উৎসবে একাধিক ভালো মানের ছবি মুক্তি পেতো। দর্শকরা আগে থেকে হিসেব করে রাখত, কোন ছবি আগে দেখবেন আর কোন ছবি পরে।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে প্রতি বছর ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমা সংখ্যা কমতে থাকে। একটি, দুটি করে কমতে কমতে এবার ঈদুল আজহায় মাত্র দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। ছবি দুটির মধ্যে একটি মাত্র বড় ব্যানারে নির্মিত হালের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের। অন্য ছবিটি নামমাত্র মুক্তি পেয়েছে।
খেয়াল করে দেখা গেছে এবার ঈদের ছবি নিয়ে আলোচনা হয়নি বললেই চলে। আবহটা এমন যেন, বাংলাদেশে কোনো সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি নেই।
আরও পড়ুন : শোক দিবসে ফিল্ম আর্কাইভের আয়োজন
সিনেমার এই অবস্থা যে, ইন্ডাস্ট্রির জন্য অশনী সংকেত তা সহজে বলে দেয়া যায়। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারও তাই মনে করেন। এ বিষয়ে নিজের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, সিনেমা নিয়ে এবার তেমন কোনো আলোচনা চোখে পড়েনি। এটা চলচ্চিত্রের ভবিষ্যতের নেতিবাচক ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়। তবে চলচ্চিত্রের এই খারাপ সময় থাকবে না বলেও মনে করি। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেগুলো কার্যকর হলে সুফল পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, চলচ্চিত্রের মাদার অর্গানাইজেশন প্রযোজক সমিতির নির্বাচন হয়েছে। আশাকরছি এবার প্রযোজকরাও চলচ্চিত্রের ভালোর জন্য সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসবেন।
এদিকে, ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রিয়াজ এ প্রসঙ্গে বলেন, সিনেমার অবস্থা যে ভালো না তা আমরা সবাই জানি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করছেন। তিনি চান চলচ্চিত্র যেন এমন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে।
তিনি আরও যোগ করেন, একটা সময় ঈদের ছবি নিয়ে মানুষের তুমুল আগ্রহ থাকত। আমার নিজেরই ঈদে একাধিক ছবি মুক্তি পেত। ঈদের বিনোদনের বড় একটি মাধ্যম ছিল সিনেমা হল। মানুষ সময় বের করে সিনেমা দেখতে আসত। এখন আসছে না। অনেক সমস্যায় জড়িত ইন্ডাস্ট্রি। সেগুলো সমাধান প্রয়োজন। ব্যক্তিগতভাবে আমি সেই দিনগুলো খুব মিস করি।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ পর্যাপ্ত সিনেমা নির্মিত না হওয়াকে দুষলেন। তিনি বলেন, ঈদে মুক্তি দেয়ার জন্য যেরকম ছবি দরকার সেরকম ছবি তো নেই। যা আছে তা মুক্তি দিলে দর্শক জীবনেও সিনেমা হলে আসবে না। তবুও দেখলাম ঈদে অখাদ্য একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। আমার সিনেমা হলে, শাকিব খানের ছবি চলছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক ছবিটি দেখতে আসছেন। আরও কিছু মানসম্মত ছবি মুক্তি পেলে সিনেমা হলগুলো বেঁচে যেত। দেশের সিনেমা নাই বলেই আমরা, ভারত থেকে সিনেমা আনতে যাচ্ছি।
তিনি জানান, আগামীতে বছরে ৬ থেকে ৮টি হিন্দি সিনেমা আমদানি করা হবে। শুরুতে সেসব ছবি মানুষ লুফে নেবে, এটা ভাবছি না। বাজার তৈরির জন্য সময় দিতে হবে। বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্স যখন হলিউড ছবি আনলো, তখন শুরুতেই কিন্তু মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েনি। সময় লেগেছে। হিন্দি ছবির ক্ষেত্রেও সেরকম সময় লাগতে পারে।
আরও পড়ুন :
. অসুস্থ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আইসিইউতে
. নিজ দেশে নিষিদ্ধ মিকা সিং
. এবার কাশ্মীর নিয়ে সিনেমা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’