বিমান ছিনতাইচেষ্টা মামলা: অভিনেত্রী শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:৫৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আলোচিত বিমান ছিনতাইচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী শামসুন্নাহার শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় শিমলা চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়ায় সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অফিসে আসেন। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া।
তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার সময় নিহত পলাশের সঙ্গে পরিচয়, বিয়ে এবং পরবর্তীতে বিচ্ছেদ হওয়া নিয়ে বিস্তারিত তথ্য শিমলা আমাদের দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তদন্ত ও সাক্ষ্যে পাওয়া কিছু তথ্যের সঙ্গে শিমলার দেওয়া তথ্যের অনেকক্ষেত্রে মিল আছে। এরপরও শিমলা যেসব তথ্য দিয়েছেন তা যাচাইবাছাই করা হবে। এক্ষেত্রে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে শিমলাকে ডাকা হবে।’
আরও পড়ুন : যেসব প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে ‘মায়া’ ও ‘মাহি’কে
গত ২২ মে ভারতে অবস্থানরত শিমলার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে তাকে দেশে ফিরে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অফিসে এসে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর আগে তার ঠিকানায় নোটিশও পাঠানো হয়। ২৫ আগস্ট ভারতের মুম্বাই থেকে দেশে ফিরেন অভিনেত্রী শিমলা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে শিমলা নিজেই বৃহস্পতিবার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অফিসে আসেন। দুপুর দেড়টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাবার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এই অভিনেত্রী।
এসময় শিমলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের ফরমালিটির অংশ হিসেবে আমাকে ডেকেছিলেন। আমার কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চেয়েছেন। বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনার পরও আমার বক্তব্য আমি মিডিয়ায় দিয়েছি। একই বক্তব্য আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার সামনেও দিয়েছি।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ময়ূরপঙ্খী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। বিকেলে ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পলাশ আহমেদ নামে এক যাত্রী ফ্লাইটটি ‘ছিনতাইয়ের উদ্দেশে’ বিভিন্ন ঘটনা ঘটান। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের পর সন্ধ্যার দিকে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পলাশ এবং এই ছিনতাই কাণ্ডের অবসান ঘটে।
এই ঘটনায় নগরীর পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত প্রযুক্তি সহকারি দেবব্রত সরকার। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০১২-এর ৬ ধারা এবং বিমান নিরাপত্তাবিরোধী অপরাধ দমন আইন, ১৯৯৭-এর ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় পলাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। মামলায় নিহত পলাশ আহমেদ ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পর ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওই উড়োজাহাজ থেকে উদ্ধার করা পিস্তল ও বিস্ফোরকসদৃশ বস্তুসহ বেশকিছু আলামত জমা দেয় র্যাব ও সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিম।
গত ১৩ মার্চ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি পিস্তলের ব্যালাস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয় কাউন্টার টেরোরিজমের হাতে। এতে বলা হয়, পিস্তলটি ছিল খেলনা।
শিমলাসহ ৪২ জন সাক্ষীকে ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিমলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন সাক্ষী। তার দেওয়া বক্তব্য মামলার তদন্তে সহায়ক হবে। আমরা ছিনতাইয়ের চেষ্টার সময় বিমানে থাকা পাঁচজন যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এখন যাত্রীদের মধ্যে আরও যারা ছিলেন তাদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ছিনতাই চেষ্টা প্রতিরোধের অভিযানে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
আরও পড়ুন :
. শাহ আব্দুল করিম: না দেখার ১০ বছর
. মুম্বাইতে শুরু ‘বাঘি থ্রি’র শুটিং
. নভেম্বরে তিনদিনের ফোক ফেস্ট