যুবলীগ নেতা খালেদ ফের ১০ দিনের রিমান্ডে
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:২২
ঢাকা: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা মামলায় দশ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রিমান্ড শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ দিদার হোসাইন এ আদেশ দেন।
এদিন মামলা দুটি তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার র্যাব-৩ বেলায়েত হোসেন আসামি খালেদকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত স্বার্থে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফের ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
আদালতে খালেদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী লিয়াকত আলী লিটন, হাসানসহ কয়েকজন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আজাদ রহমান।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, আগের রিমান্ড আবেদনের সঙ্গে নতুন রিমান্ড আবেদন কোনো পার্থক্য নেই। আগে মামালর তদন্ত কর্মকর্তা যা জিজ্ঞাসা করার করে ফেলেছেন। নতুন করে জিজ্ঞাসা করার কিছু নেই। পূর্বে অস্ত্র মামলায় চারদিনের যে রিমান্ড চেয়েছিলেন সবগুলো অস্ত্রের বৈধ লাইসেন্স আছে। মাদক মামলা অনুযায়ী যে ইয়াবা পাওয়া গেছে সেগুলো আসামির শরীর থেকে পাওয়া যায়নি। এ দুই মামলায় যদি জিজ্ঞাসা করতে হয় তাহলে আদালত আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসা করার আদেশ দিতে পারেন। আমরা এই রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আসামির জামিন প্রার্থনা করছি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতকে বলেন, ‘আসামি খালেদের কাছে থেকে তিনটি অস্ত্র ও ৫৮২ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এ আসামি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। অন্যান্য আসামি ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের তথ্য জানা ও তাদের গ্রেফতারের জন্য আসামিকে ফের রিমান্ডে নেওয়া হোক।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক অস্ত্র আইনের মামলায় পাঁচদিন ও মাদক আইনের মামলায় পাঁচদিন করে মোট দশদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে র্যাব। এছাড়া মতিঝিলি থানায় খালেদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে আরও একটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র ও মাদকের মামলায় খালেদের সাতদিনের রিমান্ড শেষে ফের রিমান্ড আবেদন করে র্যাব।
গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকেই গুলশানে খালেদের বাসা ঘিরে রাখে র্যাব। এ দিন সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়। তার বাসা থেকে একটি অবৈধ অস্ত্র, লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করা আরও দুইটি অস্ত্র, কয়েক রাউন্ড গুলি ও দুই প্যাকেটে ৫৮২ পিস ইয়াবা জব্দ করে র্যাব। এছাড়া তার বাসার ওয়াল শোকেস থেকে ১০০০, ৫০০ ও ৫০ টাকার নোটের ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা র্যাব জব্দ করে। চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা সমমূল্যের মার্কিন ডলারও এ সময় জব্দ করা হয়।
এদিন বিকেলে রাজধানীর ফকিরাপুলে খালেদের ইয়ং মেনস ক্যাসিনোতেও অভিযান চালান র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ১৪২ জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ৩১ জনকে একবছর ও বাকি ১১১ জনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ক্যাসিনো থেকে জুয়ার প্রায় সাড়ে ২৪ লাখ টাকা জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া বিপুল পরিমাণ মদ, বিয়ার, সিগারেট ও নেশাজাতীয় বিভিন্ন দ্রব্য জব্দ করা হয় ওই ক্যাসিনো থেকে।
আরও পড়ুন
শামীম-খালেদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত, শাওন-সম্রাটসহ ১২ জনের তলব
খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার
খালেদের ক্যাসিনোতে প্রতি রাতে লেনদেন হতো কোটি টাকা!
অস্ত্র-মাদকের মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে যুবলীগ নেতা খালেদ
‘আন্ডারওয়ার্ল্ডে দাপট’ খালেদের, পালাতে চেয়েছিলেন সিঙ্গাপুরে