Tuesday 15 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চীন, মিশর, মিয়ানমারের পেঁয়াজে আগ্রহ কম


১ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:১০ | আপডেট: ১ অক্টোবর ২০১৯ ২৩:০১
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চীন, মিশর ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পৌঁছেছে এক হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পেঁয়াজ। তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজভর্তি কনটেইনার নিয়ে জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের পথে আছে। কিন্তু ভারত ছাড়া অন্য দেশের পেঁয়াজে তেমন আগ্রহ নেই দেশের মানুষের। আকারে বড় হওয়ায় শুধু হোটেলেই চলে মিশরের পেঁয়াজ। মিয়ানমারের পেঁয়াজ চট্টগ্রাম ছাড়া দেশের অন্য কোথাও তেমন চাহিদা নেই। তাই ভারত ছাড়া অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করলে বাজারের অস্থিরতা কাটবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন খোদ ব্যবসায়ীরাই।

চট্টগ্রাম বন্দরে ১৪টি কনটেইনারে চীন ও মিশর থেকে এসেছে প্রায় ৪২০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ। কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে এসেছে ৬৫০ মেট্রিকটন। এছাড়া তুরস্ক থেকে আরও ৩০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ ২-১ দিনের মধ্যে পৌঁছবে বলে আমদানিকারক ও বন্দরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পেঁয়াজ নিয়ে কনটেইনারবাহী তিনটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভেড়ার পর সেগুলো থেকে খালাস শুরু হয়। তিনটি জাহাজে এসেছে পেঁয়াজভর্তি ১৪টি কনটেইনার। প্রতিটি ৪০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিকটন করে পেঁয়াজ আছে। জাহাজ তিনটি হচ্ছে- এমভি কালা পাগুরো, জাকার্তা ব্রিজ ও কোটা ওয়াজার। তিনটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জেনি এন্টারপ্রাইজ, এন এস ইন্টারন্যাশনাল ও হাফিজ করপোরেশন এসব পেঁয়াজ এনেছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো.ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ১৩টি কনটেইনার খালাস করে জেটির ইয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সেগুলো ডেলিভারির জন্য অপেক্ষমাণ আছে। আমদানিকারক যত দ্রুত খালাস করবেন, তত দ্রুত বাজারে পণ্য পৌঁছবে। আরেকটি কনটেইনার যেটি আছে, সেটিও খালাসের প্রক্রিয়া চলছে।’

আমদানিকারকদের সূত্রে জানা গেছে, বন্দর থেকে পেঁয়াজগুলো ছাড় করার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষ করেছে। রাতেই সেগুলো বন্দর থেকে খালাস শুরু হতে পারে। তুরস্ক থেকে পেঁয়াজের কনটেইনার নিয়ে আসা জাহাজটি বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার জেটিতে ভিড়তে পারে, এমন আভাস দিয়েছেন বন্দরের কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার আকবর হোসেন বলেন, ‘বন্দরে আসা পেঁয়াজের শুল্কায়ন যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করে দ্রুত সেগুলো খালাসের অনুমতি দেওয়ার জন্য সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কারও গাফিলতি দেখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে চট্টগ্রাম নগরীর ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত নাফ নদীর টেকনাফ স্থলবন্দরে ৮টি ট্রলার পেঁয়াজ নিয়ে নোঙ্গর করেছে। এসব ট্রলারে ৬৫০ দশমিক ৯২৩ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আছে। দুপুর থেকে এই চালানের পেঁয়াজ নিয়ে ট্রাক চট্টগ্রামের দিকে আসতে শুরু করেছে।

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় বাজার হামিদউল্লা মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্দরে পেঁয়াজ এসেছে। টেকনাফ দিয়েও পেঁয়াজ ঢুকেছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ‍দুপুর পর্যন্ত খাতুনগঞ্জে ৭ ট্রাক মিয়ানমারের পেঁয়াজ ঢুকেছে। মিশরের এক ট্রাক পেঁয়াজ এসেছে। সেটা কারা আমদানি করেছে আমরা জানি না।’

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দেশের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। সিদ্ধান্ত প্রচারের সঙ্গে সঙ্গেই পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে, একদিনের ব্যবধানে যা প্রতিকেজিতে দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

ভারত রফতানি বন্ধের পর মিয়ানমার, চীন, মিশর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আসলেও বাজারে দামে তেমন হেরফের হবে না বলে মনে করছেন আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

পাবনার বেড়া উপজেলার পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. ওমর আলী ফকির সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেনাপোল, হিলি, সোনা মসজিদ দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে পেঁয়াজ আসে এক থেকে দেড় হাজার টন। গত দুইদিন ধরে এক কেজি পেঁয়াজও আসছে না। মিয়ানমার, মিশর কিংবা তুরস্ক থেকে ১০০-২০০ টন পেঁয়াজ দিয়ে বাজারে কিছুই হবে না। মিশরের পেঁয়াজ একেকটি ২৫০ গ্রাম থেকে এক কেজি পর্যন্ত হয়। হোটেলে ছাড়া সাধারণ মানুষ তো এই পেঁয়াজ কেনে না। মিয়ানমারের পেঁয়াজ চলে শুধু চট্টগ্রামের দিকে, কিছুটা ঢাকাতেও। দেশের অন্যান্য এলাকায় বার্মিজ পেঁয়াজের ডিমান্ড নেই।’

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) খাতুনগঞ্জের বাজারে ভারতের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাজার এখনও চড়া। প্রতিদিন যদি ২৫০-৩০০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ বাজারে আসে এবং ভারত থেকে আমদানি শুরু হয়, তাহলে দাম এমনিতেই পড়ে যাবে।’

এদিকে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের মজুদ ও দাম বাড়ানো ঠেকাতে অভিযান শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সহকারী কমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম আড়ত ও দোকানে গিয়ে পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ও বিক্রয়মূল্য যাচাই করছেন।

আরও পড়ুন-

হিলিতে ঈদের পর পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ

নিম্নমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি

৫ স্থানে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি শুরু, দাম ৪৫ টাকা

বাজারে কৃত্রিম সংকট, দ্রুতই কমবে পেঁয়াজের দাম

লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম, আরও বাড়ার আশঙ্কা

হিলিতে আমদানি করা পেঁয়াজের ‘ছড়াছড়ি’, নেই ক্রেতা

পেঁয়াজের কেজি শতক ছুঁয়েছে, মিলছে না টিসিবির ট্রাক

হুট করে হিলিতে বাড়ল পেঁয়াজের দাম, বিপাকে পাইকাররা

একদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৪৫ টাকা

পেঁয়াজের বাজার ভারতনির্ভর, দাম কমাতে পারবে না মিশর-তুরস্ক

শুরু হয়নি টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি, মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক

সংকট মেটাতে মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিশর থেকে আমদানি হচ্ছে পেঁয়াজ

পেঁয়াজের দাম মিয়ানমারের পেঁয়াজে আগ্রহ কম মিশরের পেঁয়াজে আগ্রহ কম