ছাত্রদের প্রতিটি দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা রিজভীর
৯ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:৫৪
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে ছাত্রদের প্রতিটি দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ একাত্মতা ঘোষণা করেন।
রিজভী বলেন, ‘আবরার ফাহাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস যখন আধিপত্যবিরোধী গগনবিদারী স্লোগানে উত্তাল তখন ছাত্রদেরকে নিরস্ত করতে সরকার নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিচ্ছে। সরকার প্রধান ও মন্ত্রীরা নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। আবরারকে যে কারণে হত্যা করা হয়েছে সেদিক থেকে দৃষ্টি ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠছেন তারা।
দেশের মাটি, পানি, আকাশের স্বার্থে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আবরারের স্ট্যাটাসের পেছনে কারণই ছিল দেশবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা ও সত্য ইতিহাস তুলে ধরা। আর দেশবিরোধী চুক্তিটি করেছে সরকার। সুতরাং আবরার খুনের দায় সরকার এড়াতে পারে না। দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ছাড়া আবরারের আত্মা শান্তি পাবে না।’
রিজভী বলেন, ‘খুনি ও স্বৈরাচারের কাছে বিচার চাওয়ার সময় এখন না। এখন সময় এসেছে স্বৈরাচারের বিচারের। যারা ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশের সবকিছু অন্যোর হাতে তুলে দিচ্ছে তাদের বিচার করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা নিজেদের সমালোচনা কিছুটা সহ্য করতে পারলেও ভারতের সমালোচনা সহ্য করতে পারে না মন্তব্য করে তিনি। এ বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘ন্যায্য হিস্যার কথা বললেও আওয়ামী লীগ সরকার তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। ন্যায্য হিস্যার দাবি তোলাটাও যেন ভয়ংকর অপরাধ। সুতরাং আবরার ফাহাদ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর কাছে অপরাধী। কারণ, সে বাংলাদেশের প্রতি আওয়ামী লীগের বন্ধু রাষ্ট্রের আচরণের সত্য ইতিহাস তুলে ধরেছিল।‘
আবরারকে সময়ের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, ‘মৃতুঞ্জয়ী আবরার ফাহাদ দেশের জন্য জীবন দিয়ে মৃত্যুকে জয় করেছে। এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার যুদ্ধের প্রধান প্রেরণা হয়ে থাকবে আবরার। আবরার ফাহাদ আমাদের প্রাণের পতাকা।’
যার রুমে আবরারকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সেই অমিত সাহার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুমটি অমিত সাহার। তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন ও বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অথচ আবরারকে মারার সময় অমিত সাহা সেখানে উপস্থিত ছিল এবং সে মারামারিতে অংশ নেয়।’
গোটা দেশকে এখন একটি টর্চার সেলে পরিণত করা হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের পর সেখানে পাওয়া গেছে আধুনিক টর্চার সেল। যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের অফিসে পাওয়া গেছে টর্চার সেল। বুয়েট ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহার ২০১১ নম্বর কক্ষটিও একটি টর্চার সেল। এই টর্চার সেলগুলোই বর্তমান সরকারের শক্তির উৎস।’