মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার ৪০তম রায় আজ
১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:৩৬
ঢাকা: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধা সদর উপজেলার মো. রনজু মিয়াসহ ৫ রাজাকারের বিরুদ্ধে আজ রায় ঘোষণা করা হবে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে রায় পড়া শুরু হবে। এটি ট্রাইব্যুনালের ৪০তম রায়।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করবেন। ট্রাইব্যুনালের বাকী দুই সদস্য বিচারপতি হলেন- বিচারপতি আমীর হোসেন ও বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার।
মামলাটি রায়ের জন্য গতকাল ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকায় আসে। পরে ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করে দেন।
এর আগে, গত ২১ জুলাই মামলাটির বিচারিক কাজ শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় প্রথমে ছয়জন আসামি ছিলেন। পরে অভিযোগ গঠনের আগেই একজন মারা যায়। পরে পাচঁ জনের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম চলে। এর মধ্যে মো. রনজু মিয়া (৫৯) গ্রেফতার আছেন, বাকি চারজন পলাতক। তারা হলেন- আব্দুল জব্বার মন্ডল, তার ছেলে জাছিজার রহমান ওরফে খোকা (৬৪), মোন্তাজ আলী ব্যাপারি (৬৮) ও আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল (৬২)।
এসব আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ চারটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ১২ মার্চ প্রসিকিউশন এ মামলার অভিযোগ দাখিল করে। প্রসিকিউশনের অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ মে চার অভিযোগে মামলার অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
মামলায় প্রসিকিউটর ছিলেন মোখলেছুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আবুল হাসান।
আসামিদের বিরুদ্ধে যে চার অভিযোগ
প্রথম অভিযোগ: একাত্তরে জুন মাসের প্রথম দিকে রাজাকার আজগর হোসেন খানের নেতৃত্বে ৮/১০ জন রাজাকার এবং ১৫/২০ জন পাকিস্তান দখলকার সেনাবাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার জন্য গাইবান্ধা জেলার সদরের সাহাপাড়া ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামে হামলা করে। তারা অম্বিকা চরণ সরকার, দ্বিজেন চন্দ্র সরকার ও আব্দুল মজিদ প্রধানকে নির্যাতন করে। আসামিরা ফুল কুমারী রানী ও তার জা সাধনা রানী সরকারকে (বর্তমানে মৃত) আটক করে নির্যাতন করে। তারা মুসলমান হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে কপালের সিঁদুর এবং হাতের শাখা ভেঙে ছেড়ে দেয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ: গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আবু বক্কর, তারা আকন্দ, আনছার আলী এবং নছিম উদ্দিন আকন্দসহ মোট ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করে এবং ৪০/৫০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠন করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
তৃতীয় অভিযোগ: গাইবান্ধা জেলার সদর থানার সাহাপাড়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে লাল মিয়া বেপারী, আব্দুল বাকী এবং খলিলার রহমানসহ ৫জনকে গুলি করে হত্যা করে।
চতুর্থ অভিযোগ: গাইবান্ধার সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা, মিরপুর, সাহারবাজার, কাশদহ, বিসিক শিল্প নগরী, ভবানীপুর এবং চকগায়েশপুর গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, ইসলাম উদ্দিন এবং নবীর হোসেনসহ মোট ৭জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।