স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : রাজধানীর কাফরুলে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মোমিন হত্যা মামলার ২ জনের ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। নিম্ন আদালতের রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে এক আসামি মারা যাওয়ায় তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এর অাগে ব্ধুবার এ মামলায় যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর খুন হন কলেজছাত্র মোমিন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে মতিঝিল থানার ওসি রফিকসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মামলায় ওসি রফিককে আসামির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২০০৭ সালের ১৩ মে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।
এর বিরুদ্ধে বাদী নারাজী আবেদন দিলে ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব দেন আদালত। ডিবিও তদন্ত শেষে ওসি রফিককে বাদ দিয়ে ২০০৮ সালের ২ মার্চ অভিযোগপত্র দেয়। এরপর মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়।
২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর দেওয়া এ তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে ওসি রফিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ওইবছরের ১১ নভেম্বর এ অভিযোগপত্র গৃহীত হয়।এরপর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এ ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করা হয়।
পরে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ স্থানান্তর করা হয়। এ আদালতে ওসি রফিকের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয় ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি।
২০১১ সালের ২০ জুলাই রায় হয় এ মামলার। রায়ে ওসি রফিকসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান তাজসহ ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর নিম্ন আদালত থেকে ফাঁসি অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে।
পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিরা আপিল করেন। এ আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর ১২ নভেম্বর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।
রাজধানীর মতিঝিল থানার সাবেক ওসি একেএম রফিকুল ইসলাম এ মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। তিনি কারাবন্দী অবস্থায় ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর মারা যান।ওসি রফিক মারা যাওয়ায় মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামির সংখ্যা এখন দু’জন। এরা হলেন-সাখাওয়াত হোসেন জুয়েল ও তারেক ওরফে জিয়া।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন হাবিবুর রহমান তাজ, জাফর আহমেদ, মনির হাওলাদার, বাবু, আসিফুল হক জনি ও শরিফউদ্দিন।
আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত মোমিনের ভাই সামসুল ইসলাম সুমন সারাবাংলাকে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমরা বারবারই পুলিশ প্রশাসন দ্বারা প্রতারিত হয়েছি। তারা মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করেছিল।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি না। এ মামলায় অধিকাংশ আসামিই পলাতক রয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী তাজের বাহিনী এখন প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। ফাঁসির আসামিদের গ্রেফতারে বারবার থানায় গিয়ে কোনো ওয়ারেন্ট বের করতে পারছি না। নিম্ন আদালতে দীর্ঘ দিন হলো রায় হয়েছে কিন্তু এখনো অনেক আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।
এজেডকে/টিএম/একে