উন্নয়ন যেন ঢাকাকেন্দ্রিক না হয়: জয়
২২ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৫১
ঢাকা: কেউ এসেছেন কিশোরগঞ্জ থেকে, কেউবা নেত্রকোনা। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই ও তারুণ্যের প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলা আয়োজিত তরুণ উদ্যোক্তা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্বেচ্ছাসেবী ও গবেষকদের নিয়ে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দারুণ এক মিলনমেলা হয়ে গেল রাজধানীর রেডিসন হোটেলে। যেখানে বেশ কয়েকটি সেশনে তরুণদের মুখোমুখি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
সারাদেশ থেকে আসা এসব সচেতন তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি, তাদের কাছ থেকে উদ্ভাবন, উদ্যোগ ও রাজনীতি বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শও নিয়েছেন জয়। বিস্তারিত আলোচনায় তাদেরকে পরবর্তী বাংলাদেশের স্বপ্ন ও বাস্তবতার কথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দিয়েছেন সহযোগিতার আশ্বাস।
‘ইয়ুথ অন পলিটিক্স’ অনুষ্ঠানে জয় বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন তার সেরা সময়টা পার করছে। তবে এই উন্নয়ন যেন ঢাকাকেন্দ্রিক না হয়। উন্নয়নকে দেশের সবখানে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে তরুণদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সারাদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। দেশজুড়ে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে করে তারা দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে।’
বাংলাদেশের তরুণরাও যাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে বিশেষায়িত জ্ঞান অর্জন করতে পারেন সেজন্য সরকারের আইসিটি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্প থেকে রোবোটিকস, আইওটি ও এআই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, ‘এগুলোর ওপর স্পেশালি গুরুত্ব দিয়েছি এবার। এ বিষয়গুলোতে প্রশিক্ষণ ও রিসার্চ ফ্যাসিলিটি করে দিলে অভিজ্ঞতার দিক থেকে আমরা অন্য দেশ থেকে এগিয়ে যাব। এসব বিষয় নতুন, খুব বেশি বিশেষজ্ঞ নেই। নিজেদের উদ্যোগে রিসার্চ করলে এসব সেক্টরে আমাদের দারুণ সম্ভাবনা আছে।’
স্বপ্নবাজ তরুণদের সহায়তার জন্য সরকারের বরাদ্দ বাড়বে উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘প্রতিবছর সরকারের আয় বাড়ছে, তরুণদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। এবছর বাজেট ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পরের বাজেটে তরুণ উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে আরও বেশি বরাদ্দ দেওয়া হবে।’
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তরুণদের প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, ‘আইসিটির প্রশিক্ষণগুলো ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। ঢাকার বাইরেও এ ধরনের অনুষ্ঠান করা হবে। ফ্রিল্যান্সার কিভাবে হওয়া যায় সে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।’
নিজের বক্তৃতায় ঝরে পড়া ও স্কুলে না যাওয়া তরুণদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়ে দেওয়া সংকল্পের কথাও বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, ‘যারা কোনোদিন স্কুলে যায়নি, ঝরে পড়েছে, তাদের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নেওয়া হবে। সবার পক্ষে শিক্ষা নিয়ে কর্মসংস্থান করা সম্ভব নয়। তাই শিক্ষার বাইরে থাকাদের জন্য প্রকল্প নেওয়া হবে।’
যার যার মতো করে উদ্যোক্তা হতে, তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জয় বলেন, ইউনিভার্সিটিতে যাব, একটা চাকরি করবো, ৯টা থেকে ৫টা অফিস করবো, পেনশন নিয়ে অবসরে যাবো, তার বাইরে কিছু করার নেই, এটা আমার কাছে কিছুটা স্বার্থপরের মতো চিন্তা মনে হয়। আমি এমন পরিবারে বড় হয়েছি যেখানে- তুমি দেশের জন্য কিছু না করে থাকো, তাহলে তুমি কিছু করোনি, এমনভাবে ভাবা হয়।’
ইউথ অন পলিটিক্স অনুষ্ঠানে দেশের প্রতিটি জেলা থেকেই তরুণেরা অংশগ্রহণ করেছেন। সজীব ওয়াজেদ জয় ছাড়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকও। তবে তিনি মঞ্চে উঠে তরুণদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা তরুণদের সঙ্গে একই সারিতে বসে উপভোগ করেছেন জয়ের বক্তৃতা।
সারাবাংলাকে মন্ত্রী পলক বলেন, ‘তরুণদের নিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় অনেক বড় স্বপ্ন দেখেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এই তরুণরা একদিন বাংলাদেশকে নেতৃত্বে জায়গায় নিয়ে যাবে। এজন্য এখন থেকেই তাদেরকে প্রস্তুত করে তোলা হচ্ছে। তাদেরকে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ও অবকাঠামোগত ভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।’