‘প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনরাও পার পাচ্ছেন না’
২৫ অক্টোবর ২০১৯ ২১:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চলমান শুদ্ধি অভিযানের আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনরাও পার পাচ্ছেন না, মন্তব্য করে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন,—অপরাধ করলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের বান্ডেল এস কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে স্থানীয় হরিজন সম্প্রদায়ের আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
যুব সমাজকে রক্ষায় মাদক, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ‘মাদককে না বলুন’ স্লোগান নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একেবারে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছেন এবং সেটি মুখে বলে নয়। প্রধানমন্ত্রী যেটা অন্তরে ধারণ করেন অর্থাৎ বিশ্বাস করেন সেটাই কিন্তু উনি বাস্তবায়ন করেন।’
বড় বড় নেতার পেছনে ছবি তুলে অপরাধীরা পার পাবেন না—মন্তব্য করে নাছির বলেন, পত্রিকায় দেখেছেন জি কে শামীমও তো কোনো একটা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে রেখেছিল। তো, সে কি পার পেয়েছে? পার পাবে না। আমাদের বড় বড় নেতারা কি পার পাচ্ছেন? উনারা তো বড় বড় নেতাদের সঙ্গে অহরহ ছবি তুলেছিল। বা উনারা আত্মীয়স্বজন।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন? আমার পরিবার সাতজনের। আমি, আমার দুই সন্তান, আমার বোন শেখ রেহানা, তার তিন সন্তান। এই সাত জন হলো যে আমার পরিবার। এর বাইরে আর আমার কোনো পরিবার নেই। তাহলে আত্মীয়-স্বজন তো আছে, তারা পার পাচ্ছে? পার পাচ্ছে না।
‘অপরাধ করলেই পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। এক সময় ছিল এখন নাই। এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে সুশাসন যেটা এটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। এবং সেটা ২০৩০ এর মধ্যে।’—বলেন নাছির।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে মেয়র নাছির বলেন, ‘আরেক নেত্রীকে কী দেখেছি? মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলেছেন। কিন্তু পুরোপুরিভাবে শতভাগ উল্টো কাজটি করেছেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিলেন। ভুল ধারণা দিয়েছিলেন, মিথ্যাচার করেছেন।’
‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দুই সন্তান দেখেন সারাবিশ্বে পরিচিত। উনাদের মেধার দ্বারা, যোগ্যতার দ্বারা, কর্মের দ্বারা। সারাবিশ্ব তাদের চেনে। আর আরেকজন নেত্রীর কী? একজন যিনি (তারেক রহমান) আছেন দুর্নীতিবাজ, আজকে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আবার উনি বলেন উনি রাজনীতি করেন, ওই দলের নাকি প্রধান। তো রাজনীতি করলে, উনার সৎ সাহস থাকলে, দেশে আসবেন। জেলে যাবেন। মামলা করেবন। আবার মামলার মাধ্যমে উনি যদি নিজেকে নিরাপরাধ প্রমাণ করতে পারেন, বেরিয়ে আসবেন। সাজা তো অনেকের হয়। আইনের প্রতি যদি উনার শ্রদ্ধা থাকে তাহলে তো দেশে চলে আসতেন।’
মেয়র নাছির বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক জীবনে অনেক প্রতিকূলতা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েছি। আমি যে পরমুহূর্তে বেঁচে থাকবো সে নিশ্চয়তা আমার ছিল না। বছরের পর বছর সে ধরণের কঠিন সময় পার করেছি। কই তখন তো একটা পানও খাই নাই, সিগারেটও খাই নাই। হতাশার কারণে নেশাদ্রব্য খেতে হবে, এর সঙ্গে শতভাগ ভিন্নমত পোষণ করি।’
হরিজন সম্প্রদায়ের উত্তম দাশের সভাপতিত্বে ও জীবন দাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হরিজন সর্দার মায়াদিন ও কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মহসীন উপস্থিত ছিলেন।