Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পপি ত্রিপুরাকে হত্যা: সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন


২৬ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৫৭

ঢাকা: বান্দরবান সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পপি ত্রিপুরাকে হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বেশকয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, গণবিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজসহ আরও বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৮ অক্টোবর রিকশাযোগে পপি তার বান্ধবী শ্রাবন্তি হেলেনা ত্রিপুরাকে নিয়ে কর্মস্থল যাওয়ার পথে গুলশান-২ ৭৯ নম্বর সড়কে পেছন থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন জানিয়েছেন, ধাক্কা খেয়ে পপি ও হেলেনা রাস্তার দুদিকে দুজন ছিটকে পড়ে। এ সময় চালক পপির ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যায়। পরে পথচারীরা উদ্ধার করে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে পপিকে মৃত ঘোষণা করে। আর হেলেনা কোনোরকম বেঁচে গেলেও হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন।

মানববন্ধন কর্মসূচির আহ্বায়ক জন বাহাদুর ত্রিপুরা অভিযোগ করে বলেন, ‘এ ঘটনার চারদিন পর ২১ অক্টোবর ধানমন্ডি-১৪ সড়কের ১১ নম্বর বাসা থেকে শাফিন ওমায়ের নবীকে গ্রেফতার করে গুলশান থানা পুলিশ। যা বাদী পক্ষের কাউকে জানায়নি পুলিশ। এমনকি আসামিকে আদালতে পাঠালেও বাদী পক্ষের কাউকে জানায়নি। আসামির বয়স কমিয়ে ১৭ করা হয়েছে এবং আদালত তাকে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠায়।’

জন বাহাদুর ত্রিপুরা বলেন, ‘ঘটনার পরদিন ময়নাতদন্তের সময় আসামিপক্ষের লোকজন পপি ত্রিপুরার পরিবারকে মীমাংসায় যাওয়ার জন্য নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান। এমনকি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বান্দরবানের একজন সরকারি কর্মকর্তাকে দিয়ে বাদীপক্ষ এবং বাদীপক্ষের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে নানানভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে আসামিপক্ষ। আমরা মনে করছি, মামলার তদন্ত চলাকালীন এসব হুমকি সুষ্ঠু বিচার ও তদন্তে প্রভাব ফেলছে।’

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে ১১ দফা দাবি পেশ করেন জন বাহাদুর ত্রিপুরা। দাবিগুলো হলো- পপি ত্রিপুরার হত্যাকারী আসামি বাংলাদেশের আইন মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে, দুর্ঘটনার সময় রেকর্ডকৃত সিসি টিভি ফুটেজ আবশ্যিকভাবে বাদীপক্ষকে এক কপি দিতে হবে, ঘটনার পর থেকে পপি ত্রিপুরার পরিবারের সদস্যদের ওপর নানা হুমকি আসছে। সে জন্য অবিলম্বে হুমকিদাতাদের চিহ্নিতসহ গ্রেফতার করে ত্রিপুরার পরিবারের নিরাপত্তা দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটক ও হত্যাকারী আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে, দুর্ঘটনা সংগঠক চালককে বাঁচানোর অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে, হত্যাকারীর বয়স ও তার সুস্পষ্টভাবে পরিচয় দিতে হবে, পপির হত্যার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করা। প্রয়োজনে পিবিআই বা অন্য কোনো তদন্তকারী সংস্থা কর্তৃক তদন্ত করা, সড়ক দুর্ঘটনারোধে লাইসেন্সবিহীন চালক ও গাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিতকরণ, সড়ক দুর্ঘটনায় অপমৃত্যু বন্ধ করতে হবে, হত্যার তদন্ত নিয়ে তদন্তকারীর টালবাহানা বন্ধ করতে হবে ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হবে।

পপি ত্রিপুরার ভাই জয়ন্ত নিকোলাস সারাবাংলাকে জানান, দুই বোন এক ভাই তারা। সবার বড়বোন এনিক লারা ত্রিপুরা রাজধানীর নটরডেম কলেজের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বিয়ে করে সংসার করছেন। মেঝো বোন গুলশানে একটি পার্লারে কাজ করতেন। জয়ন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পড়াশুনার খরচ পপি বহন করতেন।

জয়ন্ত বলেন, ‘আমার বোনই আমার লেখাপড়ার খরচ বহন করত। এখন কি হবে তা জানি না। দিশেহারা হয়ে পড়ছি।’

বিজ্ঞাপন

পপির যেদিন শেষকৃত্যানুষ্ঠান চলছিল সেদিন বান্দরবানের থানচি কৃষিব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা দেখা করে পরিবারের লোকজনকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেন। তারা বলেন, আসামিপক্ষ অনেক বড়লোক। তারা এই সব মামলায় ভয় পান না। তাই বেশি ভালো হবে মামলাটি তুলে নিয়ে মীমাংসা করা। আমরা অনেক আতঙ্কিত অবস্থায় আছি-বলেন জয়ন্ত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান থানার এসআই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামি কিশোর হওয়ায় আদালত তাকে গাজীপুর কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আসামি রাজধানীর কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এ লেভেলের শিক্ষার্থী। তার বয়স যাচাইয়ে তদন্ত চলছে।

টপ নিউজ পপি ত্রিপুরা মানববন্ধন হত্যার বিচার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইনজুরিতে মৌসুম শেষ রদ্রির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২৮

সম্পর্কিত খবর