Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১০ বছরে শুমারিতে খরচ বেড়েছে অনেক: পরিকল্পনামন্ত্রী


২৯ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:১৬

ঢাকা: যেকোনো প্রকল্পেরই খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। সেই হিসেবে ১০ বছর আগের শুমারি খরচের সঙ্গে এখনকার খরচের অনেক পার্থক্য আছে বলে মনে করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। গণনাকারীর সংখ্যা, তাদের পারিশ্রমিকসহ নানা খরচ বেড়েছে বলে জানান তিনি।

‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পরিসংখ্যান ব্যুরোর খরচ নিয়ে খোদ পরিকল্পনামন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন। এরপরেই খরচ অর্ধেকে নামিয়ে এনে নতুন প্রস্তাব দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সে প্রসঙ্গেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী জানান, ১০ বছর আগের শুমারি খরচ আর এখনকার খরচ এক নয়। এই সময়ে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আগে গণনাকারী ছিল ৩ লাখ ৭৬ হাজার। এখন তাদের সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার। তাদের পারিশ্রমিকও ৪ গুণ বেড়েছে। উপজেলা পর্যায়ে গণনাকারীদের মোটর সাইকেল দেওয়া হবে। তাছাড়া জেলা উপজেলা পর্যায় কর্মকর্তাদের গাড়ীও আছে। তার খরচ প্রয়োজন।

একনেক বৈঠকে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক নিরাপত্তা উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭১০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। চলতি বছর থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্রিফিং এ জানানো হয়, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির লাইসেন্স দেওয়ার জন্য পারমাণবিক নিরাপত্তা অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া পারমাণবিক নিরাপত্তা ও বিকিরণ সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরণের কোড, গাইড, প্রবিধান ও স্টান্ডার্ড প্রণয়ন এবং প্রয়োগ করা হবে। নির্মাণ পর্যায়ে লং টার্ম ম্যানুফ্যাকচারিং ইকুইপমেন্ট, উৎপাদন পর্যায়ে ফুয়েল উত্তোলন, কমিশনিং এবং পরিচালনা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ পরিদর্শন পরিচালনা, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের জন্য ঢাকায় শুন্য দশমিক ৫০ একর এবং রুপপুরে ২ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, ঢাকায় ১০ তলা অফিস ভবন নির্মাণ, রুপপুরে ৬ তলা অফিস ভবন, ১০ তলা আবাসিক ভবন এবং তিন তলা রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া, রাশিয়া থেকে ১২ হাজার ৪৬২ জনমাস এবং ভারত ও অন্যান্য স্থান থেকে ৯৮৪ জনমাস পরামর্শক সেবা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ৬০ সেট বৈদেশিক যন্ত্রপাতি, ২৩২ সেট স্থানীয় যন্ত্রপাতি, ৬টি যানবাহন ক্রয় এবং স্থানীয় ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পের কাজ ভালভাবেই এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের অগ্রগতির হার এখনও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রয়েছে। এটির নিরাপত্তার জন্যই আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্কার সুপারিশ অনুযায়ীই নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটির খরচ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ঋণ নিলেও প্রকল্পের স্বার্থেই অনেক সময় পরামর্শ নিতে হয়। তাই বাড়তি টাকা প্রয়োজন হচ্ছে।

মঙ্গলবার রুপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক নিরাপত্তা উন্নয়নসহ ১০ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৪৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৮ হাজার ২৭১ কোটি ২৩ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা খরচ করা হবে।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশে ৪টি মেরিন একাডেমি স্থাপনে খরচ হবে ৫২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। তবে এ প্রকল্পটি ব্যয় না বাড়িয়ে শুধু মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিশোরগঞ্জ পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর-টোক জেলা মহাসড়কে যথাযথমানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ঢাকা আরিচা-মহাসড়কের আমিনবাজার, সালেহপুর ও নয়ারহাট নামক স্থানে ৩টি সেতু নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৩৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে বৃহত্তর রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রসারন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৫০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি প্রকল্প-৩ এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা। শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার পদ্মা শাখা নদীর ডান তীরের ভাঙ্গন হতে নওয়াপাড়া এলাকা এবং পদ্মা নদীর বাম তীরের ভাঙ্গন হতে চরাত্রা এলাকা রক্ষা প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপনে খরচ ধরা হয়েছে ৬৩২ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

একনেক টপ নিউজ পরিকল্পনা মন্ত্রী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর