কালার অব বাংলাদেশ: ছবির রঙ, ছবির দেশ
১৫ নভেম্বর ২০১৯ ২১:২৩
ঢাকা: মাথায় পদ্মপাতা ঠেকিয়ে বৃষ্টির সঙ্গে ছুঁই না ছুঁই খেলায় অট্টহাসিতে ফেটে পড়া গ্রামের অবুঝ মেয়েটি যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। অথবা ছোট্ট বাঁশের বেড়ায় ঘেরা পাঠশালাতে ছোট্ট মেয়ের ‘আমি হব’ কবিতাটি বাংলার কিশোর-কিশোরীদের বড় হয়ে ওঠার গল্প।
দেশের সংস্কৃতি, প্রকৃতি, উৎসব আর রঙের নানা মুহূর্ত যেন জায়গা পেয়েছে একই ছাদের নিচে।
জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে ঢুকতেই চোখে পড়বে ছোট ছোট স্পট লাইটের মধ্যে ‘কালারস অব বাংলাদেশ’ শিরোনামের আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
ছোট-বড় আলোকচিত্রগুলোর মধ্য আছে শাম্মু আজিমের আনবাউন্ড চাইল্ডহুড, শামছুল হক সুজার লাইট অব ব্লেসিংস, আছে শাহারিয়ার ফারজানার ক্রিয়েটিং দা ফিউচারসহ দেশের নবীন ও পেশাজীবী আলোকচিত্রীদের ১৩০টি নানা ধরনের ছবি।
ফ্রেমে বাঁধাই করা ছবি ছাড়াও এ প্রদর্শনীতে ছবি দেখানোর জন্য আছে বায়োস্কপ, ভিজ্যুয়াল মনিটর, আয়না ও হ্যাঙ্গার। যেখানে দর্শনার্থীরা বিভিন্নভাবে ছবি দেখার স্বাদ পাচ্ছেন।
আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেখতে এসে দর্শনার্থীদের আনন্দ ও একইসঙ্গে জীবনে প্রেরণা যোগাতে আছে একটি মজার বোর্ড। যেখানে চিরকুটের মাধ্যমে জীবনের পাওয়া আর না পাওয়ার হিসাব মেলাচ্ছেন অনেকেই ।
প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আলোকচিত্র বিষয়ে আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) প্রথম দিন বেলা সাড়ে ৩টায় ‘ক্রিয়েটিভ পাবলিক ভ্যালু অব আ ফটোগ্রাফার’ শিরোনামে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যার সভাপতিত্ব করেন ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের কালচার প্রোগ্রাম অফিসার কিযী তাহনীন।
প্রদর্শনীর তিনদিন বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পাবলিক টক ও প্যানেল ডিসকাশনের আয়োজন করা হয়েছে।
ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের কালচার প্রোগ্রাম অফিসার কিযী তাহনীন বলেন, ‘সচেতনতা বৃদ্ধিতে ফটোগ্রাফি সেক্টরটা যে কতটা শক্তিশালী সেটাই প্রমাণ করেছে এই প্রদর্শনী। তাছাড়া আমরা বিভিন্ন সময়ে আলোকচিত্রীদের যে প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছি সেগুলো নিয়েই আলোচনা করার জন্য আয়োজন করেছি পাবলিক টক ও প্যানেল ডিসকাশনের।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি প্রদর্শনীর মূল লক্ষ্য যদি হয় এই সেক্টরের উৎকর্ষ সাধন। তাহলে এমন প্রদর্শনী আরও হওয়া উচিৎ।’
প্রদর্শনীর কিউরেটর প্রীত রেজা বলেন ‘আমরা এই প্রদর্শনীর মধ্যদিয়ে এক পজিটিভ বাংলাদেশকে তুলে ধরেছি। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বন্যা, নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও আমরা প্রকৃত বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চেয়েছি। এই প্রদর্শনী দেশের তরুণ ফটোগ্রাফারদের উদ্বুদ্ধ করতে সহায়তা করবে।’
গ্যালারি ঘুরে প্রদর্শনীতে আসার অভিজ্ঞতাও ডায়রিতে লিখে রেখে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
ইউনেস্কো ঢাকা দফতর এবং এর পার্টনাররা সমন্বিতভাবে এ আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলাদেশে কোরিয়ান অ্যাম্বাসির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
১৭ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।