বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়ন-অগ্রগতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত : রাষ্ট্রপতি
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ২০:০৬
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
সিলেট : বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়ন ও অগ্রগতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিলেটের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রেখে বর্তমান সরকার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ এর পথচিত্র অনুসরণ করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে চলেছে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন যুদ্ধে জয়লাভের জন্য কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন অপরিহার্য। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও স্থিতিশীলতা সংরক্ষণে কৃষির ভূমিকা আজও মুখ্য। সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈরিতা মোকাবেলা করে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ধান, গম, ভুট্টা, সবজি, মাছ মাংস ডিম ও দুধ উৎপাদনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে এগিয়ে চলেছে। এটি সম্ভব হয়েছে সরকারের বাস্তবমুখী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে।
এ সময় তিনি আরও বলেন , কৃষিখাতে আজ যে অভাবনীয় সাফল্য দৃশ্যমান, এর পেছনে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন আমাদের কৃষিবিদরা। গবেষণার মাধ্যমে তারা পরিবেশ উপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ সব পর্যায়ে তা দ্রুত হস্তান্তর ও বিস্তারেও ভূমিকা রাখছেন। কৃষিতে উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে কৃষক পর্যায়ে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া পচনশীল কৃষিপণ্যের সংরক্ষণ ও বহুমুখীকরণেও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরী করতে হবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, তা দু’দশক ধরে নানা আন্দোলন-সংগ্রাম, চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাস্তব রূপ লাভ করে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এই দীর্ঘ ও ব্যাপক কর্মযজ্ঞের পৌরোহিত্য ছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার প্রাজ্ঞ ও দুরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ও বিকাশকে অবারিত করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান যুগ হচ্ছে বিশ্বায়ন ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির যুগ। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই বিশ্ব ব্যবস্থায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তার আপন বৈশিষ্ট্য নিয়ে টিকে থাকতে হলে তার স্থানিক, জাতিক ও বৈশ্বিক অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। এটি সুনির্দিষ্ট করা সম্ভব প্রাতিষ্ঠানিক উপযোগিতা, মান ও আন্তর্জাতিক চরিত্র নিশ্চিত করার মাধ্যমে। আমি জেনে আনন্দিত, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তার লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে শিক্ষা ও গবেষণা তৎপরতায় এই চাহিদাগুলোর বিশ্বস্থ প্রতিফলনে বিশেষ যত্নবান। এখানকার শিক্ষা কারিকুলাম নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়ে থাকে।’
সমাবর্তন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব। সমাবর্তনে বক্তা ছিলেন- ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ড. মো. ফরাস উদ্দিন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বাংলাদেশ মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. গোলাম শাহি আলম।
এর আগে রাষ্ট্রপতি বেলা ২টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেটে পৌঁছেন। সেখানে তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন।
সারাবাংলা/টিএম