নাগরিকত্ব বিল নিয়ে উত্তেজনা পশ্চিমবঙ্গে, থানা ও রেলে আগুন
১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৫২
ভারতে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আসাম, ত্রিপুরার মতো জ্বলছে পশ্চিমবঙ্গও। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ট্রেন, বাস ও থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
লোকসভা, রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ার পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য উত্তাল হয়ে ওটে। পরিস্থিতি সামলাতে দুটি রাজ্যে সেনা মোতায়েন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে সেই তুলনায় শুরুতে শান্ত ছিলো বাংলা। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ নাগরিকত্ব আইন অনুমোদন দেওয়ার পর পরই এ রাজ্য উত্তাল হতে শুরু করে। শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে জনতা। ঘটে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা।
শনিবার রাজ্যটিতে রেল অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। ইট-পাটকেল ছোড়ার পাশাপাশি কয়েক জায়গায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে বিঘ্ন হয় সড়ক যোগাযোগ। এদিন লালগোলা ও কৃষ্ণপুর রেলস্টেশনে অন্তত পাঁচটি খালি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। হামলা চালানো হয় সামশেরগঞ্জ থানায়।
এদিকে, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয় এজন্য হুশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়। সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে পা না দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আহ্বান জানান তিনি।
ফেসবুকে নিজের পেইজে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে একটি ভিডিওবার্তা প্রচার করেন তিনি। এর সঙ্গে তিনি লিখেন, গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করুন, কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পথ অবরোধ, রেল অবরোধ করবেন না। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বরদাস্ত করা হবে না। যারা গন্ডগোল করছেন, রাস্তায় নেমে আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন, তাঁদের কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। বাসে আগুন লাগিয়ে, ট্রেনে পাথর ছুড়ে, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি লোকসভায় উত্থাপন করেন। ৭ ঘণ্টা বিতর্ক শেষে ৩১১-৮০ ভোটে পাশ হয় বিলটি। এরপর বুধবার নাগরিকত্ব বিল ভারতের রাজ্যসভায় পেশ করা হয়। রাজ্যসভায় দিনভর উত্তপ্ত বিতর্কের পর ১২৫-১০৫ ভোটের ব্যবধানে বিলটি পাস হয়।