Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আ.লীগের ২১তম কাউন্সিল দুপুরে, প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান


২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫২

ঢাকা: রাত পোহালেই দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় কাউন্সিল। জাতীয় নির্বাচনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দলকে আরও সুসংহত করার লক্ষ্যে এই সম্মেলনে তিন বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব উপহার পাবে আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুন- রোজ গার্ডেন থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান: আ.লীগের কাউন্সিল পরিক্রমা

২০ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধনের পর ২১ ডিসেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে নেতৃত্ব নির্বাচনের কাউন্সিল অধিবেশন। বরাবরের মতো এবারও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কাঁধেই অর্পণ করা হবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। তাকে সামনে রেখেই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নব উদ্যমে পথ চলতে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেবে আওয়ামী লীগ।

আলোচনার কেন্দ্রে সাধারণ সম্পাদক পদ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনের দৃশ্যমান জৌলুস খানিকটা কমছে। তবে দলের হাল ধরতে শেখ হাসিনার রানিং মেট কে হবেন, সেটিই এই সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্যতম আলোচ্য বিষয়। ওবায়দুল কাদের কি পারবেন টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের পদ ধরে রাখতে? নাকি তাকে সরিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেবেন শেখ হাসিনা? নতুন কেউ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে এলে তিনি কি জ্যেষ্ঠ কোনো নেতা হবেন, নাকি অপেক্ষাকৃত তরুণ কোনো নেতাকে বেছে নেওয়া হবে? এসব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আওয়ামী লীগের ভেতরে-বাইরে। তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাই বলছেন, কাউন্সিল অধিবেশনের আগে এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর পাওয়ার সুযোগ নেই। আর সিদ্ধান্ত মূলত নির্ভর করছে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ওপরই।

আরও পড়ুন- সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আশা-চিন্তার দোলাচলে যারা

এদিকে, সম্মেলনের একদিন আগে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের রুদ্ধদার বৈঠকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ছিলেন অনেকটা নিরব। সম্মেলনের আগে এ ধরনের সভায় তার বক্তব্য থেকে বরাবরই নেতৃত্বের ইঙ্গিত খুঁজে পান নেতাকর্মীরা। এবার এ বিষয়ে তার নিরবতায় কেউ কোনো ইঙ্গিতই খুঁজে পাচ্ছেন না। তাতে করে বিশেষত সাধারণ সম্পাদকের পদটি নিয়ে গুঞ্জনের ডালপালা আরও বিস্তৃত হচ্ছে।

সম্মেলন সামনে রেখে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল প্রাঙ্গণে একদিকে যেমন পদ্মার বুকে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর অবয়বের সামনে প্রস্তুত নৌকা আকৃতির মঞ্চ, তেমনি সম্মেলনে অতিথিদের নিমন্ত্রণসহ খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর প্রস্তুতিও শেষ।

দলকে শক্তিশালী দেখতে চান কাদের

সম্মেলনের ঠিক আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে সম্মেলনের কর্মযজ্ঞ পরিদর্শন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিন বছরে দলের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়েও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি। জবাবে নিজেদের সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতা থাকতে পারেও বলে স্বীকার করে নিয়েছেন কাদের। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাচ্ছেন কি না, সে প্রশ্নে তার সাফ জবাব, একমাত্র আল্লাহ পাক আর নেত্রী শেখ হাসিনাই জানেন।

আরও পড়ুন- আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসছেন পুতুল?

তবে নেতৃত্ব নয়, দলের সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাতেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানালেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের বিজয়কে সংহত করার পথে কিছু বাধা আছে, চ্যালেঞ্জ আছে, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হুমকি এখনো আছে। এখনো তারা তলে তলে হয়তো বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিতে পারে। জঙ্গিবাদ এ দেশ থেকে চলে গেছে, এটা আমাদের বলার উপায় নেই। তারা ওপরে ওপরে নিষ্ক্রিয় থাকলেও ভেতরে ভেতরে সক্রিয় থাকতে পারে। তাই সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষ, তার মূলোৎপাটন করতে হবে। বিজয়ের মাসের জাতীয় সম্মেলনে সেটাই আমাদের অঙ্গীকার হয়ে থাকবে বলেই প্রত্যাশা করি।’

নতুন নেতৃত্ব কী কী অঙ্গীকারে কাজ করবে— এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমাদের জাতীয় নির্বাচনি যে ইশতেহার, আমাদের যে নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি, সেই প্রতিশ্রুতিগুলো আমরা পালন করব। শুধু সরকার নয়, সেই চ্যালেঞ্জ অতিক্রমের মতো শক্তিশালী হতে হবে দলকে। দলকে সুসংগঠিত করা, সুশৃঙ্খল করা এবং ছোটখাটো যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো দূর করে স্মার্ট ও আধুনিক পার্টি হিসেবে আমরা নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগকে জনগণের সামনে উপহার দিতে চাই।

আসছে নির্বাচনি ইশতেহার পূরণের নেতৃত্ব

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ইশতেহারে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে। তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এসব অঙ্গীকার ‍পূরণে অভিজ্ঞ, পুরনো ও সমালোচিতদের বাদ দিয়ে মন্ত্রিসভায় একঝাঁক নতুন মুখ উপহার দেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। পরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের অঙ্গীকার রক্ষায় দলের নেতাদের মধ্যেই যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে চলে অভিযান। এতে সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন শীর্ষ নেতা ও প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। পাশাপাশি নভেম্বর মাসে সহযোগী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের কমিটিতেও বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব উপহার দেন। নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা জনগণের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করতে এই সম্মেলনেও একঝাঁক মেধাবী, তরুণ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব উপহার দিতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা— এমনটিই মনে করছেন সবাই।

আরও পড়ুন- আ. লীগের সম্মেলন: নেতৃত্বে আসছে স্বচ্ছ ও মেধাবী মুখ

বর্তমান কমিটির মেয়াদে তিন বছর শেষে প্রায় ২৯টি জেলা সম্মেলন হয়েছে। প্রায় ১৫০টির মতো উপজেলা সম্মেলন হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্তমান কমিটির মেয়াদে। গত জাতীয় নির্বাচনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা মনোনয়নবঞ্চিত হলে দলের মধ্যে অনেকের টনক নড়ে।

সুসজ্জিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রস্তুত

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে এবারে গোটা ঢাকাকে সুসজ্জিত করা না হলেও সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সজ্জায়। দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’র আদলে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। মঞ্চের সামনে শোভাবর্ধন করছে প্রমত্তা পদ্মার বুকে দৃশ্যমান পদ্মাসেতু। মূল মঞ্চটি ১০২ ফুট দীর্ঘ, ৪০ ফুট প্রশস্ত। নৌকার পালগুলোতে থাকছে দলীয় প্রতীক ও দলীয় নেতাদের মুখচ্ছবি। মূল মঞ্চের পেছনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ছবি ছাড়াও ঠাঁই পেয়েছে জাতীয় চার নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম এ মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছবি।

আরও পড়ুন- পদ্মার বুকে পাল তোলা নৌকায় সম্মেলন করবে আ.লীগ

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম চার নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের ছবিও রাখা হয়েছে। সম্মেলনস্থলের ভেতরে চারপাশে রয়েছে বাংলাদেশের অভ্যুদয় থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম ইতিহাসের পরিক্রমা সম্বলিত বিশাল বিশাল ব্যানার-ফেস্টুন। এছাড়াও থাকবে বিএনপি-জামায়াত জোটের আগুন সন্ত্রাস ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন নেতিবাচক রাজনীতির চিত্রায়ন।

মোট ২৮টি এলইডি পর্দায় সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান দেখার ব্যবস্থা থাকবে। একটি গেট ভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত রেখে বাকি চারটি গেট প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মূল মঞ্চে দলের চার সিনিয়র উপদেষ্টাসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা বসবেন। ৮১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে চারটি পদ খালি রয়েছে।

প্রস্তুতিতে ঘাটতি নেই

সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে গত কয়েকমাস টানা কাজ করেছে ১১টি উপকমিটি। এবারের সম্মেলনে ব্যয় ধরা হয়েছে চার কোটি টাকা। সারাদেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর ও ১৫ হাজার ডেলিগেটসসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন এই আয়োজনে। এ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

আরও পড়ুন- ‘আ. লীগ কখনো চমক সৃষ্টির কাউন্সিল করে না’

এর মধ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর গণভবেন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাতীয় কাউন্সিল পরিচালনায় তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন অনুমোদন দেওয়া হয়। এবারের গঠনতন্ত্রে সহসম্পাদক পদটি বিলুপ্তি করার সংশোধনী প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২১ ডিসেম্বর সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে থাকছে কাউন্সিল অধিবেশন, যেখান থেকে ঘোষণা আসবে নতুন কমিটির। এবারের সম্মেলনের স্লোগান- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ।’

সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। ২১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দিনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিন বছরের জন্য নতুন একটি শক্তিশালী ও গতিশীল কমিটি গঠিত হবে।

আরও পড়ুন- শেখ হাসিনার সঙ্গে বেলুন-পায়রা ওড়াবেন জেলা সভাপতি-সা.সম্পাদকরা

মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির দায়িত্বে রয়েছেন দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও কেন্দ্রীয় সদস্য মির্জা আজম। প্রস্তুতি প্রসঙ্গে নানক বলেন, ‘এবারের প্যান্ডেলটি অনেক বড়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এত বড় প্যান্ডেলে আর কখনো সম্মেলন আয়োজন হয়নি। আশা করি, ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই প্যান্ডেলের ভেতর বসতে পারবে।’

এছাড়া সম্মেলনের প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ার কারণে মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায়ের দিকটি মাথায় রেখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নামাজ পড়ার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান নানক। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টা থেকে কাউন্সিলর-ডেলিগেটরা আসতে শুরু করবেন। জুমার নামাজের যেন বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য আলাদা একটি প্যান্ডেলে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন- হাসিনা-কাদেরের আসন সারিতে বসবেন আ. লীগের ৪ উপদেষ্টা

সম্মেলন সামনে রেখে সহসম্পাদক পদ বিলুপ্ত ও উপকমিটি গঠনের প্রস্তাবনা ছাড়া গঠনতন্ত্রে বড় কোনো সংশোধনী আসছে না বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটির সদস্য সচিব আফজাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার গঠনতন্ত্রে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন নেই। সহসম্পাদক পদ না রাখার জন্য আমরা কাউন্সিল অধিবেশনে প্রস্তাব দেবো। তাদের বদলে প্রস্তাব থাকবে বিষয়ভিত্তিক উপকমিটি গঠনের। তারা সেমিনার, আলোচনা ও কর্মশালা করবে, বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে এবং এগুলো সুপারিশ আকারে কেন্দ্রীয় কমিটিতে দাখিল করবে। এর বাইরে তেমন কোনো পরিবর্তন উল্লেখ করার মতো নেই।’

স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপকমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘দেশের প্রাচীনতম ঐহিত্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগ। যদিও এবার আমরা তত বেশি আড়ম্বরভাবে সম্মেলন করতে যাচ্ছি না, তবু দেশের তৃণমূলের নেতরা কাউন্সিলে অংশ নিতে আসবেন। সম্মেলনকে সফল করার জন্য শৃঙ্খলা একটি অন্যতম প্রধান বিষয়। সে লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপকমিটির পক্ষ থেকে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবকের তালিকা তৈরি করেছি। তারা সম্মেলনে দায়িত্ব পালন করবেন।’

আরও পড়ুন- আরেকটি ‘অনুভূতির’ সম্মেলনের দ্বারপ্রান্তে আওয়ামী লীগ

সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্য সচিব ও দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০ থেকে ২৫ মিনিট ইতিহাস নির্ভর, মুক্তিযুদ্ধ এবং আজকের বাংলাদেশ শিরোনামে গীতিনাট্য পরিবেশন করা হবে। এখানে স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পীরা থাকবেন। এছাড়াও থাকবেন তিন প্রজন্মের শিল্পীরা। তারা জাতীয় সংগীত, দেশাত্মবোধক ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কোরাস গান পরিবেশন করবেন। জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সংস্কৃতি উপকমিটির চেয়ারম্যান নাট্যজন আতাউর রহমান, সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী খালিদ বাবু, শামীম আরা নিপা, শিবলী— সবাই মিলে সাংস্কৃতিক আয়োজনটি দেখভাল করছেন। এছাড়াও সন্ধ্যায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।’

দলের সম্মেলনে আগত ২৫ হাজার অতিথিকে পাটের ব্যাগ উপহার দেবে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি। ওই ব্যাগে আওয়ামী লীগের ইতিহাস সম্বলিত স্মরণিকা, শোক প্রস্তাব, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভাষণ থাকবে। এছাড়াও স্বাস্থ্য উপকমিটির পক্ষ থেকে চারটি অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম সম্মেলনস্থলে জরুরি সেবার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

আরও পড়ুন- বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আ. লীগের সম্মেলনে দাওয়াত

খাদ্য উপকমিটির আহ্বায়ক ও দলের কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম সারাবাংলাকে বলেন, এ মিলনমেলায় লোক হবে প্রায় ৫০ হাজার। এই ৫০ হাজার লোকের খাবার ব্যবস্থা করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ও কামরুল ভাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার। জুমার নামাজের আগেই আমরা খাবার পর্বটা শেষ করতে চাই। আটটি বিভাগের জন্য আমরা ১০টি প্যান্ডেল থেকে খাবার বিতরণ করব। ১০টি প্যান্ডেলে একহাজার কর্মী কাজ করবে।

দলের উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, একটি যথাযথ কাউন্সিল করার জন্য যা যা উপাদান দরকার, তার সবকিছু থাকছে। সারাদেশের নেতারা আসবেন। গানের অনুষ্ঠান আছে। একটি পরিচ্ছন্ন কাউন্সিল অনুষ্ঠান মানুষ যেন দেখতে পারে, সেজন্য আমরা দলের পক্ষ থেকে সামগ্রিক প্রস্তুতি শেষ করেছি।

২১তম কাউন্সিল আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের সম্মেলন জাতীয় কাউন্সিল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর