বিজ্ঞাপন

হাসিনা-কাদেরের আসন সারিতে বসবেন আ. লীগের ৪ উপদেষ্টা

December 19, 2019 | 6:58 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাত পোহালেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন। এর মধ্য দিয়ে আগামী তিনবছরের জন্য দলকে আরও সুসংহত ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নতুন-পুরনো মুখের সমন্বয়ে নেতৃত্ব উপহার পেতে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই নতুনত্ব ও অভিনবত্বের পরম্পরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এবার সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের মূল মঞ্চে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সারিতে আসন পাচ্ছেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের চার নেতা।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাউন্সিলের উদ্বোধন হবে। আর শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশনে হবে কাউন্সিল অধিবেশন। বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সভাপতি পদে অপরিহার্য ধরে তাঁর নেতৃত্বে পরবর্তী তিন বছরের জন্য নতুন একটি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ক্ষমতাসীন দলটি।

সম্মেলন সফল করতে ১১টি উপ-কমিটির নেতারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এবারের সম্মেলনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা। সারাদেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর ও পনের হাজার ডেলিগেটসসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনস্থলে উপস্থিত থাকবেন। এ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও দলীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এবার ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’ স্লোগানের অঙ্গীকার নিয়ে সম্মেলন হবে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এবারের প্যান্ডেলটি অনেক বড়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এত বড় প্যান্ডেলে আর কখনও সম্মেলন আয়োজন হয়নি। আশা করি, ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই প্যান্ডেলের ভেতর বসতে পারবে।’

বিজ্ঞাপন

এছাড়া সম্মেলনের প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ার কারণে মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায়ের দিকটি মাথায় রেখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নামাজ পড়ার বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান নানক।

প্যান্ডেলের ভিতরে মোট ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হবে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান। দলের নেতা-কর্মীদের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট গেট থাকবে ৫টি। একটি গেট ভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। মূল মঞ্চে চারজন উপদেষ্টাসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা বসবেন। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৮১ সদস্যের মধ্যে চারটি পদ খালি রয়েছে। প্রথম সারির হেড টেবিলে বসবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সারিতে তাদের পাশে উপদেষ্টা পরিষদের চার সিনিয়র সদস্য এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা বসবেন। এর পেছনে দ্বিতীয় সারিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও চার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বসবেন। তৃতীয় সারিতে সম্পাদকমণ্ডলী ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা বসবেন।

এবিষয়ে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মির্জা আজম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম হেড সারিতে দলীয় সভাপতি ও পার্টির জেনারেল সেক্রেটারির পাশে থাকবেন উপদেষ্টাপরিষদের সিনিয়র চার সদস্য। এর পরের আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের আসন থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা আজম আরও জানান, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের ইতিহাসে এত বিশাল আয়োজন কখনও হয়নি। মূল প্যান্ডেলের ভেতরে ৩০হাজার চেয়ার বসানো হবে। এই বাইরে পাশে আরও দশ হাজার থাকবে। প্যান্ডেলের ভেতরে ভিআইপিদের দুই আড়াই হাজার চেয়ারের আলাদা বসার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে আমাদের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের বসার ব্যবস্থা থাকবে। জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক; তাদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা থাকবে।’

প্রসঙ্গত, ২০তম জাতীয় সম্মেলনে দলের উপদেষ্টাপরিষদের সদস্যদের জন্য মঞ্চের সামনে সম্মানিত অতিথির আসন নির্দিষ্ট ছিল। কিন্তু দলীয় সভাপতির সিদ্ধান্তে এবার নিজের পাশেই তাদের বসার আসন রাখা হয়েছে।

এদিকে গতকাল ১৮ডিসেম্বর গণভবনে বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শেষ বৈঠক হয়। বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সংসদ সদস্য ৪১ থেকে ১০জন বৃদ্ধি করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট সদস্য করার প্রস্তাব গৃহীত হয়। এটি পাসের জন্য সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের সামনে উত্থাপন করা হবে। এরপর এটি কাউন্সিলরদের ভোটে পাস হলে ৫১সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টাপরিষদ গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সম্মেলনের শেষ প্রস্তুতি কার্যক্রম পরিদর্শনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় তিনি বলেন, ‘আগামীকাল ২০ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং ২১ডিসেম্বর আমাদের দ্বিতীয় অধিবেশনে যে অধিবেশন হবে। দ্বিতীয় অধিবেশনে মূলত আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরা যোগ দেবেন। আমি সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট, বিভিন্ন জেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদকরা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য দেবো। গঠনতন্ত্র ঘোষণাপত্রের আপডেট আছে। কিছু সংশোধনীও আছে। এরপর আমাদের এই কমিটি বিলুপ্ত হবে। বিলুপ্ত হওয়ার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন মঞ্চে আসন গ্রহণ করবে এবং সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীতা আহ্বান করবে। এটাই হচ্ছে ২১ তারিখের আয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন