চলে গেলেন ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি
২ জানুয়ারি ২০২০ ০৮:৩৩
ঢাকা: সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি আর নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি। সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিএসএমএমইউয়ের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বণিক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৯ বছর।
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পির ভাই শওকত ওসমান জানান, বাপ্পির মরদেহ প্রথমে মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটিতে তার বাসায় নেওয়া হবে। সেখানে জোহরের নামাজের পর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তার তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পির মৃত্যু সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে দেখতে আসেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরে নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল রাজনীতিক। তার মৃত্যুতে বিরাট সম্পদ হারাল আওয়ামী লীগ।’
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপ্পি খুবই বুদ্ধিমতী ও আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সৎ ছিলেন। তার মতো মানুষের মৃত্যু আওয়ামী লীগের জন্য ক্ষতি।’
এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরীসহ অনেকে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন বাপ্পি। হাসপাতালের ৩১২ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার অবনতি হলে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৩০ ডিসেম্বর চিকিৎসকরা জানান ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি এইচওয়ানএনওয়ান (H1N1) ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত। এটি বাইরের দেশে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস হিসেবে পরিচিত হলেও এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোতে এটি এভিয়েন ফ্লু হিসেবে পরিচিত। তার অক্সিজেন মাত্রাও স্বাভাবিক ছিল না। এ অবস্থায় তাকে বিদেশে নেওয়া যাবে না বলেও জানানো হয়।
১ জানুয়ারি অ্যাডভোকেট ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. এ কে কামরুল হুদা। এদিন তাকে পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। তবে সে সুযোগ আর পেলেন না বাপ্পির স্বজনরা।
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি নবম ও দশম সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বেও ছিলেন।
আরও পড়ুন-
সাবেক সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি লাইফ সাপোর্টে
এভিয়েন ফ্লু আক্রান্ত ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পির অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’