Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পৌষের বৃষ্টিতে আলু চাষিদের সর্বনাশ


৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৭:৪৪

চাঁদপুর: দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে চাঁদপুরে ভেসে গেছে কৃষকের আলুক্ষেত। সদ্য রোপণ করা আলু বীজ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা জানান, পানি নিষ্কাশন করতে না পারায় পৌষ মাসের বৃষ্টিতে বেশিরভাগ নিচু জমিতেই আলুর আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলায় ৩ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমির আলুর বীজ এখন পানির নীচে। যদি আজ থেকে (সোমবার, ৬ জানুয়ারি) টানা রোদ হয় তাহলে আলুর বীজ কিছুটা রক্ষা পেতে পারে।

তবে চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, অঝোর ধারায় বৃষ্টি বন্ধ হলেও গুঁড়ি, গুঁড়ি বৃষ্টি থাকবে আরও কয়েক দিন। এরপরই আসবে শৈত্যপ্রবাহ। এ কারণেই বড় ক্ষতির আশংকা করছেন জেলার চাষিরা।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, জেলার এবার সবচেয়ে বেশি আলুর চাষ হয়েছে মতলব দক্ষিণে। সেখানে ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর বীজ রোপণ করেছেন চাষিরা। এছাড়া চাঁদপুর সদরে ১ হাজার ৮০০ হেক্টর, মতলব উত্তরে ৮০০ হেক্টর, হাজীগঞ্জে ৯৫০ হেক্টর, শাহারাস্তিতে ২৫ হেক্টর, কচুয়ায় ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর, ফরিদগঞ্জে ১৪০ হেক্টর ও হাইমচরে ১২৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।

বৃষ্টিতে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মতলব উত্তর উপজেলার নিচু এলাকা। সেখানের প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির আলু বীজ পানির নিচে রয়েছে। এছাড়া চাঁদপুর জেলা সদরে ৩০০ হেক্টর জমির আলুবীজ পানিতে তলিয়ে গেছে।

চাষিরা জানান, অসময়ের বৃষ্টিতে পানি জমে রোপণকৃত আলুর বীজ ও সার সবই নষ্ট হয়ে গেছে। কেবলমাত্র বীজই নষ্ট হয়েছে ৬ লাখ টাকা ওপরে। এছাড়া ইরি-বোরো ধানের বীজতলা, করলা, ধনিয়া, মূলা, লালশাক, পালংশাক, মরিচ, লাউ, কুমড়া ইত্যাদি শাক-সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

চাঁদপুর সদরের বাবুরহাটের কৃষক রমজান বলেন, ‘বৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই ঘুম নেই। ছেলে-মেয়ে নিয়ে পানি সরানোর চেষ্টা করছি, যদি আল্লাহ রক্ষা করে।’ একই কথা জানালেন হাজীগঞ্জের রাজারগাঁও এলাকার কৃষক মোস্তফা কামাল। তবে তার অভিযোগ, বৃষ্টিতে জমি ভেসে গেলেও কোনো কৃষি কর্মকর্তা বা তাদের প্রতিনিধির কাছে পরামর্শ মিলছে না।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়নমনি সূত্রধর বলেন, ‘কাজীরগাঁও মাঠে রফিকুল ইসলাম নামে একজন ব্লক সুপার ভাইজার অতিরিক্ত দায়িত্বে আছে। তারা কেন মাঠে যাচ্ছেন না আমি বিষয়টি দেখবো।’

চাঁদপুর খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবদুর রশিদ জানান, এ বছর আলু চাষের প্রথম মৌসুমে ২/৩ দিন বৃষ্টি হওয়ায় আলুর বীজ রোপণে কিছুটা দেরি হয়েছে। কোথাও গাছের চারা উঠেছে, কোথাও এখনো উঠেনি। আবার কোথাও কোথাও এখনও বীজ রোপণ করা হচ্ছে। যে কারণে বৃষ্টিতে কৃষকরা সমস্যায় পড়ছেন।

জমিতে পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে যেসব আলু বীজের গাছ বড় হয়েছে সেখানে অবশ্যই সেচ ব্যবস্থা রাখতে হবে। যদি দ্রুত সময়ে বৃষ্টি চলে যায়, তাহলে খুব বেশি ক্ষতি হবে না।’ তবে বৃষ্টি যদি আরও কয়েক দিন থাকে তাহলে কৃষকরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলেও আশংকার কথা জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

আলু বৃষ্টি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর