Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাবির ছাত্রী হলে শিক্ষককে শারীরিক আক্রমণ ও লাঞ্ছনার অভিযোগ


৭ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৫৩

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা শারীরিক আক্রমণ ও লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন। ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হল শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি থামাতে গিয়ে লাঞ্চিত হন বলে অভিযোগ করেন এ শিক্ষক।

এ ঘটনায় তিনি সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক জোবায়দা নাসরিন সারাবাংলাকে বলেন, গতকাল যে বিষয়টা হয়েছে,আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন যে এটা ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ মারামারি। হলের হাউজ টিউটর হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো কেউ আক্রান্ত হলে তাকে সেভ করা। কে কোন দল করে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। কিন্তু সেখানে একজন শিক্ষক হিসেবে ছাত্রীরা আমার গায়ে তুলেছে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে তিনি বলেন, তাদের মারধরের কারণে আমার ঘাড় ফুলে গেছে এবং আমার পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা। আমি এখন চিকিৎসাধীন আছি।আমি সেটা প্রশাসনের কাছে বিচার দিয়েছি। আমি এই ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার ও নিরাপত্তা চাই।

অভিযোগের বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকিয়া পারভীন সারাবাংলাকে বলেন, আমার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সেখান থেকে তদন্ত করে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা যাবে। তবে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে কাদেরকে রাখা হয়েছে এ বিষয়ে কথা বলতে তিনি রাজি হননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে একাধিক বার কল দিয়েও যোগাযোগ করা যায় নি।

এ দিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রওনক জাহান রাইয়ান সারাবাংলাকে বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ওনার গায়ে হাত দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। উনি তো আমাদের শিক্ষক। উনি ওখানে ছিলেন , সেখানে ধস্তাধস্তির মধ্যে কিছু হলে হতে পারে। তবে তাকে টার্গেট করে মারা হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ একটা ভিত্তিহীন কথা এবং এর প্রমাণ তিনি দিতে পারবেন না।

রওনক আরও বলেন, ঘটনার সময় সেখানে হলের প্রাধ্যাক্ষ, অন্যান্য হাউজ টিউটররাসহ শিক্ষার্থীরা সবাই উপস্থিত ছিলেন। সবাই দেখেছে বিষয়টা কী হয়েছে। তাছাড়া সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। এখন যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটির প্রতি সর্বাত্মক সহায়তা থাকবে।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল সারাবাংলাকে বলেন,এটা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর একটি সুপারিশ করব।

উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শাড়ি বিতরণকে কেন্দ্র করে হলের অভ্যন্তরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন ছাত্রী আহত হয়। ছাত্রীদের মধ্যে চলমান ঝগড়া থামাতে গিয়ে তাদের হাতেই লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। অন্যদিকে রোববার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সালসাবিল রাবেয়া নামক ছাত্রলীগের এক নেত্রীকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগ টপ নিউজ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হাতাহাতি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর