সড়কে,পানিতে ডুবে ও নির্যাতনে ১ বছরে ৯৮৬ শিশুর মৃত্যু
৭ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:০৯
ঢাকা: ২০১৯ সালে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ও নির্যাতনে দেশে ৯৮৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫৫৩ ও পানিতে ডুবে মারা গেছে ২৫২ জন শিশু। এছাড়া ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, হত্যা, অপহরণ, নিখোঁজ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে আরও ৩শ ৬১ শিশু। গণমাধ্যমে শিশুদের নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশের পরিমাণও কমেছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরে বেসরকারি সংগঠন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। আটটি জাতীয় সংবাদপত্রকে উৎস ধরে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে শিশুদের নিয়ে ইতিবাচক সংবাদের পরিমাণ কমেছে আশংকাজনক হারে। ২০১৮ সালে শিশুদের নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ করা হয় ১০৩৭ টি। আর ২০১৯ সালে এই সংবাদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০৮।
গৃহকর্তা, বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষক, উত্ত্যক্তকারী, স্থানীয় চেয়ারম্যান, কর্মক্ষেত্রের মালিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়, সৎমা, সহকর্মী দ্বারা নির্যাতনের খবর প্রকাশিত হয়েছে। শিশুকে নিয়ে নেতিবাচক সংবাদের তালিকায় আরও আছে বাল্যবিয়ে, অপরাধে সংশ্লিষ্ট শিশু, পাচার, নবজাতকের মৃত্যু, দায়িত্বে অবহেলা এবং নিখোঁজ।
শিশু সংক্রান্ত ইতিবাচক খবরের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শিশু সংক্রান্ত সেমিনার, কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, শিশু উদ্ধার, পুরষ্কার, সংবর্ধনা, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে শিশুদের নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের হার বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, একের পর এক ঘটনা ঘটলেও সেটার কোন নিষ্পত্তি ঘটছে না। এতে করে অপরাধী ভাবছে তার কোন বিচার হবে না। এছড়াও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, তরুণদের ভালো শিক্ষার অভাবকেও দায়ী করেন তিনি।
শিশু নির্যাতন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে সন্তানকে বাড়িতে রেখে যান। সেখানেও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশু।
আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে একটি শিশু তার দিনের অধিকাংশ সময় কাটায়, সেখানেও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিশু। এটি দুর করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বড় ভূমিকা রয়েছে, বলেন শাহীন আনাম। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা স্বত্বেও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতন বিরোধী কমিটি করা হচ্ছে না। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পূর্বের রেকর্ড পর্যালোচনা করা হচ্ছে না। এগুলো দূর করতে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সেখানে যেয়ে সঠিক তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। এগুলো করার জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের কথা বলেন তিনি।
শিশুকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করতে হবে। শিশুর সুরক্ষায় রাষ্ট্রকে একটি বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। পাড়ায় পাড়ায় শিশু সুরক্ষা কমিটি করার পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন আনাম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এরোমা দত্ত, শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রুহুল আমিন ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের চাইল্ড প্রটেকশন বিভাগের সম্বনয়কারি রাফিজা শাহীন।
ধর্ষণ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন শিশু শিশু মৃত্যু শিশুর মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনা