৮ দফা দাবিতে ঢাবির পাঁচ ছাত্রীহলের নারী সমাবেশ
৮ জানুয়ারি ২০২০ ২০:২১
নিরাপদ ক্যাম্পাসের জন্য ৮ দফা দাবিতে ‘নারী সমাবেশ’ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পাঁচটি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হল, শামসুন নাহার হল, সুফিয়া কামাল হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রীরা যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করেন।
সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আটটি দাবি জানান। আট দফা দাবিগুলো হলো, দেশে সকল ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার দ্রুত বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা। দেশের সব আদালতে নারী নিপীড়ন সেল গঠন করে ধর্ষণের মামলার বিচার সর্বোচ্চ ১ বছরের মধ্যে শেষ করা। টিএসসি থেকে সুফিয়া কামাল হল, গণতন্ত্র তোরণ থেকে সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত ল্যাম্পপোস্ট ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের সমস্যা দেখার জন্য নারী উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের যে কোনো আইনি সহায়তার খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহন করা। ক্যাম্পাস থেকে ভবঘুরে, নেশাখোর ও পাগলদের অপসারণ করা। ক্যাম্পাসের বাসের স্টপেজগুলোর নিরাপত্তা পুনর্বিবেচনা করা ও ছাত্রীদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়া। জরুরী অবস্থায় অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে অবস্থান করতে দেওয়া।
নারী সমাবেশে ৮ দফা দাবি পেশ করে কবি সুফিয়া কামাল হলের ভিপি তানজিমা সোমা বলেন, আমরা এ ক্যাম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ক্যাম্পাস ভবঘুরে, ড্রাগ এ্যাডিক্টেড, হকার, টোকাই ও ভিক্ষুকের অভয়ারণ্য। এরা নানা অপকর্মে জড়িত। আমরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলছে। সব ঘটনা আমরা জানতে পারি না। কিছু ধর্ষণের ঘটনা মিডিয়ায় দেখতে পাই। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার আমরা পাই না।
তিনি বলেন, ধর্ষণের মত ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য আমাদের দেশের পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মনোভাব ও চলমান সংস্কৃতি সমানভাবে দায়ী।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.কাবেরী গায়েন, সহকারী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, প্রভাষক মার্জিয়া রহমানসহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয়বর্ষের এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঘটনার পর থেকে টানা তিনদিন ধরে বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।