তদন্তেই বন্দি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা
১১ জানুয়ারি ২০২০ ০৭:৫৯
ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা হলেও কারা জড়িত, তা বের করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের দাবি, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্ত করছে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ডিএমপির একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা ও থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় কিছুদিন ধরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে এরই মধ্যে দুটি মামলা করেছে। মামলা দুটি থানা পুলিশের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে। এখন পর্ন্ত কাউকে শনাক্ত বা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে যেসব আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, তাতে জানা গেছে, সেগুলো শুধু ককটেলই ছিল। অন্য কিছু ছিল না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকার দায়িত্বে থাকা শাহবাগ থানার এসআই রহিস উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ২৬ ও ৩০ ডিসেম্বরের ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্ন্ত দুটি মামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হলেও সেখানে কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ককটেল বিস্ফোরণের আগের ঘটনাগুলোতে মামলাও হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়, এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড থেকে সব পক্ষকে বিরত থাকার আহ্বান থাকবে।’
গত ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের পাশে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। সেদিন ককটেলের স্পিন্টারের আঘাতে ক্যান্টিনের কর্মচারী হৃদয় আহত হন। এর আগে ২৯ ডিসেম্বর মধুর ক্যান্টিনের সামনে সকালে তিনটি আর সন্ধ্যায় একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এছাড়া ২৬ ডিসেম্বর একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বর ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো থ্রেট মনে করা হচ্ছে না। ককটেল বিস্ফোরণের সবকটি ঘটনা তদন্তে পুলিশ, ডিবি পুলিশসহ অনেকেই কাজ করছে। এখনো কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে শিগগিরই জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’
ককটেল বিস্ফোরণের তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। এখনো কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদাকাতুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ কোনোদিনই কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না। শুধু শুধু আতঙ্কে থাকবে শিক্ষার্থীরা। এখন মনে হচ্ছে ক্যাম্পাসে কখন কোথায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটবে তা কেউ জানে না। মামলা হলেও তা তদন্তেই আটকে থাকবে। এরকম বহু মামলার তদন্ত হিমঘরেই আটকে থাকছে।’
অন্যদিকে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি মামলা হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পল্টন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেন্টু মিয়া বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তদন্ত শেষে জড়িতদের অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে।’