শহীদ মিনারকে ঘিরে যত আয়োজন
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৩:৫২
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ভাষা সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা আর সম্মান জানাতে একুশের প্রথম প্রহর থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেমেছে সাধারণর মানুষের ঢল। সব স্তরের মানুষ শহীদদের সম্মান জানাতে ফুল হাতে সারি ধরে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের এলাকায় জমে উঠেছে আরও আয়োজন, সব অনুষ্ঠানের লক্ষ্য এক, বাংলা ভাষাকে ধারণ।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমিতে চলছে মাসব্যাপী বইমেলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে আয়োজন করা হয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান।
বুধবার ভোরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা গেল, বেশিরভাগই শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর পর সেলফি তুলছে। কেউবা দলগতভাবে সময়টাকে ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করছে।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রায় সকলকেই দেখা গেল বাংলা একাডেমির বাইমেলায় ঢু মারতে। সকাল সাড়ে ৭ টায় বাংলা একাডেমিতে শুরু হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে দেশি-বিদেশি কবিরা নিজেদের রচনা করা কবিতা আবৃত্তি করেন।
বাইমেলার লেখক কুঞ্জে গিয়ে দেখা গেল, একদল তরুণ-তরুণী বাংলা বর্ণমালার ছাপানো অক্ষর নিজেদের জামা-কাপড়ে সাটাচ্ছেন আর গলায় বর্ণমালা গিয়ে তৈরি মালা পরছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২১শে ফেব্রুয়ারিকে স্মরণীয় করে রাখতে একদল বন্ধু নিজেদের উদ্যোগে বর্ণমালা র্যালি করার পরিকল্পনা করেছে। লেখক কুঞ্জ ফাঁকা পেয়ে সেখানেই নিচ্ছেন র্যালির আগের প্রস্তুতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির সংগঠন বাঁধন বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছে। ঘড়ির কাঁটা তখনো সকাল ১০টায় আসেনি, সাদ্দাম হোসেন নামের বাঁধনের একজন কর্মী সারাবাংলাকে জানান, সকাল থেকে প্রায় ১০০ জন মানুষ রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছে। সংগঠনটি আশা করছে সারাদিনে ১০০০ মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা যাবে। তার পাশেই চলছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। আর টিএসসি’র ভেতরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন রয়েছে।
টিএসসির ডাস থেকে যে রাস্তাটি শহীদ মিনারের দিকে চলে গেছে, ওই সড়কে দেখা গেল সাত জন স্কুল শিক্ষার্থী নিজেদের মধ্যে গল্প করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের মাথায় ফুলের তৈরি করা বিশেষ মালা আর চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস। এদেরই একজন শিক্ষার্থী বৃষ্টি, তার থেকে জানা গেল, তারা আশরাফউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, কামরাঙ্গীরচর দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতেই শহীদ মিনারে এসেছেন।
আরেকজন শিক্ষর্থী আইরিন বলেন, পৃথিবীতে বাংলা ভাষা যে স্থান দখল করেছে তা আমাদের গর্বের বিষয়। আর এই জন্য ৫২ সালের ভাষা সৈনিকদের কাছে আমরা ঋণী। তাই তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমএ
আরও পড়ুন
জাপানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা