ভোরে চীন থেকে শাহজালালে পৌঁছাবে ৩৬১ বাংলাদেশি
৩১ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৫৮
ঢাকা: চীনের হুবেই থেকে ৩৬১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরাতে চীনের উদ্দেশে রওনা করেছে বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ উড়োহাজাজ।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে চীনের উহানের উদ্দেশে যাত্রা করেছে।
চীন থেকে আসা বাংলাদেশিদের জন্য প্রস্তুত আশকোনা হজ্জ ক্যাম্প
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সেখানে পৌঁছাতে উড়োহাজাজটির প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। এরপর রাত ৩টার দিকে বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে শাহজালালে অবতরণের কথা রয়েছে।’
তৌহিদ উল আহসান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমানের ওই ফ্লাইটটিতে তিনজন চিকিৎসক ও একজন নার্সও রয়েছে।’
চীন থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের পরবর্তী ১৪ দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হবে রাজধানীর আশাকোনার হজ ক্যাম্পে স্থাপিত ‘আইসোলেশন ইউনিটে’। এরই মধ্যে ‘আইসোলেশন ইউনিটে’ প্রায় সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চীনের উহান শহরে থাকা বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা আগ্রহী এবং যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন আপাতত তাদেরই আনা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯টি পরিবার, ২০ জন শিশু। এরমধ্যে দুটি শিশুর বয়স ২ বছরের নিচে।
চীনের উহান প্রদেশের ২২টি সিটিতে বাংলাদেশের নাগরিক থাকে। এরমধ্যে বাংলাদেশ এখন শুধুমাত্র উহানে যারা আছে তাদের ফিরিয়ে আনবে। বাকি শহরগুলোতে থাকা কোনো নাগরিককে এখন দেশে আনা হবে না।
উহান শহরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর চীন সরকার কাউকেই দেশের বাইরের যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। পরে বাংলাদেশের ৩৬১ জনকে ফেরত পাঠাতে চায় চীন সরকার। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জরুরিভাবে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
চীনের উহান থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেই পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেন। এরপরেই শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্যগুলো জানিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সারাবাংলাকে বলেন, ‘যারা দেশে আসবেন তাদের আত্মীয় স্বজনরা দেখা করার জন্য ব্যাকুল থাকবেন সেটাই। তবে তাদের তাড়াহুড়ো করল চলবে না। আমরাই তাদের সময়মত খবর দেব। আমরা চাই তারা আসার পর হজক্যাম্পে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। আমরা যেমন নাগরিকদের আনতে প্রস্তুত। তবেও এটাও দেখার দায়িত্ব যে কেউ সংক্রামিত হলে সেটা যেন ছড়িয়ে না পড়ে। দেশের নিরাপত্তা সবচেয়ে আগে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা এখন শুধু উহান সিটিতে যারা থাকে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ করছি। বাকি শহরগুলোতে যারা আছে তাদেরকে আপাতত ফিরিয়ে আনার কোনো পরিকল্পনা নেই।
দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. এনামুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। চেষ্টার কোনো কমতি নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা যাবতীয় কাজ করতে দ্রুত নির্দেশ দিয়েছি। এজন্য ৪টি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটির সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাবেন।
আরও পড়ুন:
উহানে যাচ্ছে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট, ফিরবে ৩৬১ বাংলাদেশি
চীনে ২১৩ মৃত, বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
চীনের উহান থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে
‘করোনাভাইরাস ঠেকাতে চীন থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্যানিং করা হচ্ছে’