Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গোপনে দেশে ফিরেছে সন্ত্রাসী ম্যাক্সন-একরাম, পুলিশকে জানাল সরওয়ার


৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:৩১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কাতার থেকে ফেরার পর গ্রেফতার হওয়া চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. সরওয়ার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের অস্ত্রভাণ্ডার এবং সহযোগীদের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এছাড়া পুলিশ জানিয়েছে, কাতারে অবস্থান করা আরেক দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার ম্যাক্সন এবং যুবলীগ ক্যাডার একরামও সম্প্রতিকালে দেশে ফিরে এসেছে বলে তথ্য দিয়েছে সরওয়ার। পুলিশ সরওয়ারের দেওয়া এসব তথ্য যাচাইবাছাই করছে।

বিজ্ঞাপন

সরওয়ারের দেওয়া তথ্যে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার খোন্দকারাবাদ কালু মুন্সি পাড়ায় তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মজুদ করা একটি আমেরিকায় তৈরি একে-২২ রাইফেল ও ৩০ রাউণ্ড গুলি এবং ২টি এলজি ও ৪ রাউণ্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার দুপুরে কাতার থেকে আসা ফ্লাইট থেকে নেমে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে প্রবেশের পর ইমিগ্রেশন পুলিশ সরওয়ারকে আটক করে। পরে তাকে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের হেফাজতে নেওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজ বাড়িতে অস্ত্রভাণ্ডারের তথ্য দেয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, সরওয়ারের কাছে আরও অস্ত্র আছে। সেই অস্ত্রের সন্ধান পাবার জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

এদিকে সরওয়ারকে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় নেওয়ার পর তার সহযোগী ম্যাক্সনসহ সন্ত্রাসীদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কাতারে অবস্থান করে চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ওসি প্রিটন সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরওয়ার জানিয়েছে, কাতারে পালিয়ে যাবার পর ম্যাক্সন এবং একরামসহ তিনজন একসঙ্গে ছিল। পরে ম্যাক্সনের সঙ্গে সরওয়ারের সম্পর্কের অবনতি হয়। সম্প্রতি কাতারে একটি মারামারির ঘটনায় সরওয়ার গ্রেফতার হয়। একমাস কারাবাসের পর তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। কারাগারে থাকার সময় সরওয়ার জানতে পেরেছে, ম্যাক্সন ও একরাম দেশে ফিরে এসেছে। আমরা তার দেওয়া এই তথ্য যাচাইবাছাই করছি।’

বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর সরওয়ার-ম্যাক্সন ও একরামের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবলীগের কর্মী নামধারী পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ। তখন পুলিশ জানতে পেরেছিল, মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে অবস্থান করা দুই দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সরওয়ার ও ম্যাক্সন এবং যুবলীগ ক্যাডার একরামের মধ্যে ঐক্য হয়। তাদের নামে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি, আকবর শাহ, অক্সিজেন, মুরাদপুরসহ আশপাশের এলাকায় চলছিল চাঁদাবাজি। গ্রেফতার পাঁচজন সরওয়ার, ম্যাক্সন ও একরামের নামে চাঁদা নিয়ে ভাগ পাঠায় কাতারে।

ওসি প্রিটন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে সরওয়ার জানিয়েছে, চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির অনেক ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা নেই, অনেকে তাদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। তবে ৪-৫ জন সহযোগীর নাম সরওয়ার প্রকাশ করেছে। তাদের আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।’

চট্টগ্রামের একসময়ের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের সহযোগী হিসেবে সরোয়ার ও ম্যাক্সন ছিল নগরীর মূর্তিমান আতঙ্ক। ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ আটজনকে খুনের ঘটনায় দায়ের আলোচিত এইট মার্ডার মামলার আসামি ছিল সাজ্জাদ। ২০০১ সালের ৩ অক্টোবর গ্রেফতার হওয়া সাজ্জাদ বিএনপি সরকারের আমলে কারামুক্ত হয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যায়। তখন সাজ্জাদের অস্ত্রভাণ্ডারসহ অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নেয় সরওয়ার ও ম্যাক্সন।

২০১১ সালে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ দুটি একে ৪৭ রাইফেলসহ সরোয়ার এবং ম্যাক্সনকে গ্রেফতার করে। ২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কাতারে চলে যায় সরোয়ার ও ম্যাক্সন।

পুলিশ সন্ত্রাসী সরওয়ার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর