নওগাঁয় আলুর বাম্পার ফলন, মিলছে দামও
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:০৫
নওগাঁ: জেলায় আলুর ভালো ফলনের পাশাপাশি এবার দামও মিলছে বেশি। আমন ধান কাটার পর একই জমিতে আলু চাষ করে অতিরিক্ত অর্থ আয়ে খুশি কৃষকরা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
জানা গেছে, জেলায় প্রধান অর্থকরী ফসল ধান। এর পাশাপাশি সবজির আবাদও হয়ে থাকে। গত ইরি বোরো এবং চলতি আমন মৌসুমে কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। এরপর কৃষি বিভাগের পরামর্শে অনেক কৃষক ধানের জমিতে আলু চাষ করেন। বর্তমানে আলু ক্ষেত থেকে উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা জমিতে গিয়ে গাছসহ আলু ক্রয় করে পাইকারদের শ্রমিক দিয়ে আলু উত্তোলন করছেন।
কৃষকরা বলছেন, এবছর আলু চাষে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। কয়েক দফা বৃষ্টিতে আলুর তেমন ক্ষতি হয়নি। বরং বৃষ্টিতে সুবিধা হয়েছে, বাড়তি সেচের প্রয়োজন হয়নি। পাকড়ি সাদা, লাল জাত, এস টেরিক্স (স্থানীয় ভাষায় স্টিট), রোমানা, কাটিনাল, গ্যানোলা, ক্যারেজ এবং ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় জাতের আলুর চাষ হয়েছে।
নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, ইরি-বোরো ধান কাটার পর তিনি এক একর জমিতে আলু চাষ করেছেন। মাত্র ৬৫ দিনের মধ্যে আলু পরিপক্ক হয়েছে। পাইকাররা তার এক একর জমির আলু ক্ষেত থেকে ৬০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন। আলু চাষে তার মোট খরচ হয়েছিল ২৭ হাজার টাকা।
কীর্তিপুর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব মিয়া বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। প্রথম দিকে যে আবহাওয়া শুরু হয়েছিল তাতে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। কারণ জমিতে বেশি সময় পানি জমে থাকলে আলু পচে যাবে ও রোগে আক্রান্ত হবে। কিন্তু পরে আবহাওয়া ঠিক থাকায় ফলন বেশি হয়েছে।’
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর জেলায় ২০ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এরমধ্যে উন্নত ফলনশীল উফশি জাতের ১১ হাজার ১৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৯ হাজার ৭৪০ হেক্টর। হেক্টর প্রতি আলু ১৮.৬৫ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।’ কৃষি বিভাগ এ বছর জেলায় মোট ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৪৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের প্রত্যাশা করছে বলেও জানান তিনি।