‘জামিন নিয়ে সরকারের আচরণ দ্বিমুখী’
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২৩:৫৯
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সরকার দ্বিমুখী আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকে খন্দকার মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, একদিকে সরকার বলছে, জামিন দেওয়া বা না দেওয়া সম্পূর্ণ আদালতের ব্যাপার। অন্যদিকে যখনই আমরা জামিনের দরখাস্ত করি, তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আগাম হাজির হয়ে জামিনের বিরোধিতা করেন। আমরা মনে করি, এটা সরকারের দ্বিমুখী আচরণ।
এদিকে, রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে জামিন নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। আর দোষ চাপাচ্ছেন আমাদের ওপর।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়ার রিপোর্ট দাখিলের পর খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন- খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশনা চাইবেন আইনজীবীরা
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আবারও বলছি, আমরা ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চাই। সে সুযোগটা আমরা আদালতের কাছে দাবি করছি।
তিনি বলেন, আমাদের বক্তব্য হলো, যেটা মেডিকেল বোর্ডও স্বীকার করেছে— এটি সম্পূর্ণ একটি নতুন ধরনের চিকিৎসা। আন্তর্জাতিক মানের যে নতুন চিকিৎসা, সে চিকিৎসার জন্য ম্যাডামের সম্মতি দরকার। কারণ এই চিকিৎসায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা এই মেডিকেল বোর্ডের আছে কি না, তা নিয়ে ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) সন্দিহান।
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসার দরকার। উন্নত চিকিৎসার সুযোগ আমরা চাই। পিজি হাসপাতাল (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল) সম্পর্কে বলা হয়, আপিল বিভাগও বলেছে, অত্যন্ত উন্নতমানের হাসপাতাল। আমরা সেটা অস্বীকার করছি না। তারপরেও আমরা দেখেছি, পিজি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় একজন মন্ত্রীকে সরকারের তরফ থেকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। ম্যাডামের ব্যপারে এটা কেন ব্যতিক্রম হচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পারছি না।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অসুস্থ— এ নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। তিনি তার ইচ্ছামতো যেন উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পান, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আপিল বিভাগ বা হাইকোর্ট তাকে সে সুযোগটা দেবেন— এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।
খন্দকার মাহবুব হোসেনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তাহলে আমরা কি কোর্টে গিয়ে বলব জামিন দিয়ে দেওয়া হোক? খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের তো তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আদালতের সামনে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি জামিন পাওয়ার অধিকারী। সেখানে তারা (আইনজীবীরা) ব্যর্থ হচ্ছেন আর দোষ চাপাচ্ছেন অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের ওপরে। এটা সম্পূর্ণ হাস্যকর বিষয়।
মাহবুবে আলম বলেন, তারা যদি মনে করেন যে প্যারোল চান, চিকিৎসার বন্দোবস্ত চান, আইনেই বিধান আছে। সে বিধানমতো তারা দরখাস্ত করছেন না। করলে হয়তো সরকার বিবেচনায় নেবে। আবার তথ্য-উপাত্ত দিয়ে যদি প্রমাণ করতে পারেন যে সত্যিই তার বিদেশে যাওয়া দরকার, সেটাও আদালত বিবেচনায় নিতে পারেন। কিন্তু এখানে সর্বোচ্চ চিকিৎসালয়ে প্রায় ছয় জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেছেন, তার চিকিৎসা এখানেই সম্ভব। কিন্তু তিনি সম্মতি দিচ্ছেন না। এখন বিএনপির নেতারা যারা বাইরে কথাবার্তা বলছেন, আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন, তাদের তো উচিত তাদের নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) রাজি করানো।
জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় জামিন চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) শুনানি ও আদেশের জন্য দিন নির্ধারিত রয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন খালেদা জিয়া জামিন জামিন আবেদন