সন্তান বৈধ প্রমাণে সাক্ষ্য আইনের ১১২ ধারা চ্যালেঞ্জ করে রিট
৯ মার্চ ২০২০ ১৩:০৬
ঢাকা: সন্তানের বৈধতা-অবৈধতা নিরূপন সংক্রান্ত ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১১২ ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
সাক্ষ্য আইনের ১১২ ধারা সংশোধনের নির্দেশনার পাশাপাশি ১১২ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
রিটে আইন সচিব এবং আইন মন্ত্রণালয়ে লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং বিভাগের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১১২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির মাতার সহিত এক ব্যক্তি আইনত: সিদ্ধ বিবাহ কায়েম থাকাকালে অথবা বিবাহবিচ্ছেদের পর দুইশত আশি দিনের মধ্যে তাহার মাতা অবিবাহিতা থাকাকালে যদি তাহার জন্ম হইয়া থাকে এবং যদি ইহা দেখানো না হয় যে, ওই ব্যক্তি মার্তৃগর্ভে আসিয়া থাকিতে পারে অনুরূপ কোনো সময়ে বিবাহিত পক্ষদ্বয়ের পরস্পরের মধ্যে মিলনের পথ উন্মুক্ত ছিলনা, তবে সে যে জন্মিয়াছে এই বিষয় দ্বারা অবশ্যই চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হইবে যে, সে উক্ত ব্যক্তির বৈধ সন্তান।
রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, সন্তানের পিতৃত্ব ও মাতৃত্ব পরীক্ষা হতেই পারে। কিন্তু বৈধতা বা অবৈধ ঘোষণা দেওয়ার ব্যাপারটি একেবারেই অবান্তর। এর মাধ্যমে বৈধ ও অবৈধ সন্তানের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি হয়। কোনো সন্তান যদি আদালতের মাধ্যমে বৈধ প্রমাণিত না হয় তবে তাকে সারাজীবন অবৈধ সন্তানের উপাধি নিয়ে নিগৃহীত হতে হবে, সমাজের কাছে ছোট হতে হবে যা একেবারেই কাম্য নয়। ধর্ষণের ফলে সন্তান জন্ম গ্রহণ করতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এরকম অসংখ্য ঘটনা নজির রয়েছে।
তিনি বলেন, বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তের জন্য একটি নিষ্পাপ শিশু শিশুকে অপমান করা যেতে পারে না।
আইনজীবী আরও বলেন, এ আইনটি ১৫০ বছর এর পুরাতন। ব্রিটিশ আমলে করা হয়েছে এবং তা বর্তমান যুগের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত, যেখানে ডিএনএ টেস্টের সুযোগ রয়েছে। এই আইন সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ৩২ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং এটি অদ্ভুত ও বৈষম্যমূলক। এছাড়া ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অফ হিউম্যান রাইটস এর পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।