এনামুল বাছিরের জামিন প্রশ্নে রুলের রায় কাল
৯ মার্চ ২০২০ ১৮:৪৫
ঢাকা: ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। আগামীকাল ১০ মার্চ, মঙ্গলবার এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৯ মার্চ) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে দিন ঠিক করেন।
এনামুল বাছিরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের আজকে শুনানি শেষ হয়।
আদালতে আবেদনকারির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
গত বছরের ২২ জুলাই রাত পৌঁনে ১১টার দিকে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যার নেতৃত্বে দুদকের একটি টিম মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করে। পরের দিন ২৩ জুলাই জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েস তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, কমিশনের তথ্য পাচার ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে দুদক।
গত বছরের ১৬ জুলাই ৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্যা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে দায়মুক্তি দিতে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার জন্য ‘চুক্তি’ করেন খন্দকার এনামুল বাছির। সঙ্গে দাবি করেছেন একটি গ্যাসচালিত গাড়ি।
৪০ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ লাখ টাকা গত ১৫ জানুয়ারি রমনা পার্কে বাজারের ব্যাগে করে নগদে নিয়েছেন দুদকের বরখাস্ত হওয়া এই পরিচালক। তিনি দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্ত-২ অনুবিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ পেয়েই মূলত নড়েচড়ে বসে দুদক। এ ঘটনা তদন্তে কমিশনের সচিব দিলওয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
খন্দকার এনামুল বাছির ১৯৯১ সালে অ্যান্টি করাপশন অফিসার (এসিও) হিসাবে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে যোগ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হওয়ার পর তিনি সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালক ও পরিচালক হিসাবে পদোন্নতি পান।
দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডিআইজি মিজান পুলিশের উচ্চপদে থেকে তদবির, নিয়োগ, বদলিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ পায় দুদক।
অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের জন্য গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি কমিশনের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে বাদ দিয়ে এ ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পান এনামুল বাছির।
গত ৫ জানুয়ারি মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজের জামিন না মঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে আসামি পক্ষে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।
মামলাটির ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। চার্জ শুনানির জন্য বিদ্যমান আছে।