Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোয়ারেনটাইন, সেলফ কোয়ারেনটাইন ও আইসোলেশন


১৩ মার্চ ২০২০ ১২:০৮

ঢাকা: চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে শুরু করে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ১১৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এরই মধ্যে বাংলাদেশেও তিন জনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক ব্যক্তিকেই রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষণে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ভাইরাসের চিকিৎসা সম্পর্কিত দুইটি শব্দও বহুল ব্যবহৃত হতে থাকে— কোয়ারেনটাইন ও আইসোলেশন। এর সঙ্গে সেলফ কোয়ারেনটাইন ও হোম কোয়ারেনটাইনের মতো শব্দগুলোও আলোচনায় উঠে আসে। বিশেষ করে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এই শব্দগুলো আরও বেশি উঠে এসেছে আলোচনায়। কিন্তু এই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এই ধাপগুলোর কোনটি কী, কোন ধাপে কোন ব্যক্তিকে কী অবস্থায় রাখা হয়— এসব বিষয় নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই অনেকেরই।

বিজ্ঞাপন

চীনে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকলে এবং অন্য আরও কিছু দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ২৩ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে বিমানবন্দরগুলোতে স্ক্রিনিং শুরু হয়। ২৭ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হবে। এর মধ্যে চীনের উহান থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনলে তাদের কোয়ারেনটাইনে রাখা হয় আশকোনার হজ ক্যাম্পে।

এদিকে, তিন ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ার পর জানানো হয়, তারা একটি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। আরও আট জনকে রাখা হয়েছে আইসোলেশনে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে দেশের বাইরে থেকে আসা অনেকেই আছেন সেলফ কোয়ারেনটাইন বা হোম কোয়ারেনটাইনে। এসব সংবাদও প্রচার হচ্ছে গণমাধ্যমগুলোতে। অনেকের মনেই প্রশ্ন, দেশের এসব স্থানেও কি ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস? আইসোলেশন, কোয়ারেনটাইন, সেলফ কোয়ারেনটাইনের মতো শব্দগুলোর অর্থ পরিষ্কার হলে দেশের করোনা পরিস্থিতিও অনেকটাই স্পষ্ট হবে।

বিজ্ঞাপন

কোয়ারেন্টাইন কী?

চিকিৎসা শাস্ত্রে কোনো ধরনের জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকতে পারেন— এমন আশঙ্কায় থাকা কোনো ব্যক্তিকে অন্যদের থেকে আলাদা রাখার যে পদ্ধতি, তাকেই বলা হয় কোয়ারেনটাইন।

১৩৪৭ সালে ইউরোপে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে একটি রোগ মহামারি আকার ধারণ করে। ধারণা করা হয়, ১৪শ শতকের ওই রোগে সাড়ে সাত থেকে ২০ কোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। ওই সময় ইতালির ভেনিস শহর কর্তৃপক্ষ আইন জারি করে, বন্দরে ভেড়ার পর জাহাজ ৪০ দিন পর্যন্ত নোঙ্গর করে রাখতে হবে। এরপরই জাহাজ থেকে যাত্রী নামতে পারবেন। অর্থাৎ জাহাজের যাত্রীদের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা করে রাখা হয়। ওই ৪০ সংখ্যাটিকে ইতালিয়ান ভাষায় বলা হয় ‘কোয়ারান-তিনো’। এই শব্দ থেকেই ‘কোয়ারেনটাইন’ শব্দটির উৎপত্তি।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, জীবাণুর সংস্পর্শে আসা সন্দেহে কাউকে যে পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়, তাকেই কোয়ারেনটাইন বলা হয়। কোয়ারেনটাইনে থাকা মানেই কোনো ব্যক্তি অসুস্থ, বিষয়টি তেমন না। সচরাচর যারা আক্রান্ত এলাকায় ছিলেন বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন— এমন ব্যক্তিদের কোয়ারেনটাইনে রাখা হয় পর্যবেক্ষণের জন্য। এই কোয়ারেনটাইনের মেয়াদ একেক ধরনের জীবাণুর জন্য একেক রকম। যেমন— করোনাভাইরাস সংক্রমণের ১৪ দিন পর্যন্ত লক্ষণগুলো সুপ্ত থাকতে পারে বলে ১৪ দিন পর্যন্ত তাদের বিশেষায়িত স্থানে রাখা হয়। আবার ইবোলা ভাইরাসের ক্ষেত্রে কোয়ারেনটাইনের মেয়াদ ২১ দিন পর্যন্ত।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, যারা কোভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন বা আক্রান্ত এলাকা থেকে এসেছেন, কিন্তু কোনো রোগের লক্ষণ-উপসর্গ নেই, তাদের কোয়ারেনটাইনে রাখতে হবে। অর্থাৎ তাদের আলাদা করে রাখতে হবে, যেন তারা আবার অন্যদের সঙ্গে মিশতে না পারে।

ডা. ফ্লোরা বলেন, এই কোয়ারেনটাইন আবার দুইভাবে করা যেতে পারে। একটি হলো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে, অন্যটি বাড়িতে রেখে। দু’টি পদ্ধতি প্রায় একই রকমভাবে করা হয়ে থাকে। যদি কাউকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোয়ারেনটাইনে রাখতে হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত অর্থাৎ আইইডিসিআরের দাফতরিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই নিতে হবে। উহান থেকে যারা এসেছিলেন, তাদের আমরা সেভাবেই কোয়ারেনটাইনে রেখেছিলাম। তাদের ১৪ দিনের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। একইভাবে কাউকে যখন তার নিজ বাড়িতেই পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়, সেটাকেই বলে হোম কোয়ারেনটাইন বা সেলফ কোয়ারেনটাইন।

কোয়ারেনটাইন বা সেলফ কোয়ারেনটাইনে থাকা ব্যক্তিরা কি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত?

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোনো ধরনের কোয়ারেনটাইনে থাকা কোনো ব্যক্তিই আক্রান্ত রোগী নন। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের কোয়ারেনটাইনে রাখা হয় যেন সেই সময় পর্যন্ত তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা যায়। একইসঙ্গে যারা হোম কোয়ারেনটাইনে থাকেন, তারাও রোগী না। কেউ হয়তো বিদেশ থেকে এসেছেন। তাকে ১৪ দিন নিজের বাড়িতেই অন্যদের থেকে একটু আলাদা থাকতে বলা হয়, যেন তাদের মধ্যে কোনো ধরনের লক্ষণ থাকলে সেটা অন্যদের মধ্যে না ছড়ায়। এটিই হোম কোয়ারেনটাইন।

সেলফ কোয়ারেনটাইনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন— যাদের বাড়ি নেই, তারা কিভাবে হোম কোয়ারেনটাইনে থাকবে? এ পরিস্থিতির জন্যই আমরা সেলফ কোয়ারেনটাইন শব্দটি ব্যবহার করছি। এই প্রক্রিয়ায় কেউ দেশের বাইরে থেকে এসে যেখানে উঠবেন, সেখানেই যেন ১৪ দিন পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং কিছু নিয়ম মেনে চলেন। হোম বা সেলফ কোয়ারেনটাইন— উভয় প্রক্রিয়াতেই পরিবারের সদস্যসহ সবার সঙ্গেই যথাসম্ভব দূরত্ব রেখে চলতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে তিনি ঘরেই থাকবেন। এই সময়ের মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসক বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসক যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডা. ফ্লোরা বলেন, যারা বিদেশ থেকে আসছেন, তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন। তার মানে কিন্তু এই নয় যে এদের কেউ অসুস্থ। অনেকেই অবশ্য মনে করছেন যে তারা অসুস্থ। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হলো— তারা সবাই সুস্থ। দেশের বাইরে থেকে যারা এসেছেন, তাদের নিজেদের এবং বাকি সবার সুরক্ষার জন্য কেবল সেলফ কোয়ারেনটাইন বা হোম কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।

আইসোলেশন কী?

কেউ যদি কোনো জীবাণুতে সংক্রমিত হন কিংবা জীবাণুতে সংক্রমিত হওয়ার লক্ষণ বা উপসর্গ তার মধ্যে থাকে, তাহলে তাকে সবার থেকে আলাদা রেখে যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেটাকেই চিকিৎসা শাস্ত্রের পরিভাষায় আইসোলেশন বলা হয়।

আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, বাংলাদেশে যে তিন জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের আমরা আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছি। এছাড়া যাদের মধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ বা উপসর্গ রয়েছে বা যাদের সম্ভাব্য রোগী বলে মনে করছি, তাদেরকেও আমরা আইসোলেশনে নিচ্ছি।

বিমানবন্দরে যদি কাউকে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহভাজন মনে হলে তাকে কোথায় পাঠানো হবে?

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলেই তাকে পাঠানো হবে নির্ধারিত হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, বিমানবন্দর থেকে যখন কাউকে হাসপাতালে পাঠানো হয়, তার অর্থ সেই ব্যক্তির মধ্যে কিছু লক্ষণ-উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। যেহেতু তার মধ্যে লক্ষণ আছে, তাই তাকে সাধারণ হাসপাতালে পাঠানোর সুযোগ নেই, আমাদের নির্ধারিত হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রেখেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়ে থাকে। পরীক্ষার ফল ভালো এলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

কোয়ারেনটাইন ও আইসোলেশনের তুলনা করে ডা. ফ্লোরা বলেন, এই দুইটি প্রক্রিয়ারই মূল ধারণা হলো— কোনো ব্যক্তিকে অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা রাখতে হবে। এর মধ্যে যারা অসুস্থ কিংবা যাদের মধ্যে রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ রয়েছে, তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় আইসোলেশনে। অন্যদিকে আক্রান্ত এলাকা থেকে আসা কোনো ব্যক্তির মধ্যে লক্ষণ দেখা না দিলে তাকে সতর্কতার কারণে অন্যদের থেকে আলাদা করতে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়। এক কথায় বলা যায়, অসুস্থ বা আপাত অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আইসোলেশন এবং সুস্থ বা আপাত সুস্থ ব্যক্তির জন্য কোয়ারেনটাইন।

ডা. ফ্লোরা আরও বলেন, আইসোলেশন আমরা হাসপাতালেই করছি। মৃদু লক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু সময় বাসাতেও আইসোলেশন সম্ভব। তবে আমাদের এখানে রোগী বা লক্ষণ রয়েছে— এমন ব্যক্তি হাতেগোনা হওয়ায় সেটার প্রয়োজন নেই। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে জন্য তাদের এখন বাসাতেই আইসোলেশন করতে হচ্ছে।

কোভিড১৯ রোগীর চিকিৎসা

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের যে প্রাদুর্ভাব তাতে দেখা যায়, এই ভাইরাসের মৃত্যুহার ২ থেকে ৪ শতাংশ। অর্থাৎ অন্যান্য প্রাণঘাতী ভাইরাসের তুলনায় করোনাভাইরাসের মৃত্যুহার কম। তাছাড়া এই ভাইরাসের কোনো ওষুধ না থাকলেও আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার হার অনেক বেশি।

আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, আইসোলেশনে থাকা রোগীরাও যে মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকবেন, বিষয়টি তেমন নয়। কারণ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে প্রায় বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে উঠছেন। যেহেতু এই রোগের কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনেই সব দেশে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমরাও সে পদ্ধতিই অনুসরণ করছি।

ডা. ফ্লোরা আরও বলেন, আইসোলেশনে রোগীকে কতদিন রাখতে হবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। যত দিন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে না উঠবেন, ততদিন পর্যন্ত তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী তার দুই বার পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। যদি দুই বারই ফলাফল নেগেটিভ পাওয়া যায়, তার মানে সেই ব্যক্তির শরীরে আর করোনাভাইরাস নেই। এরপরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সোফি গ্রেগরি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
করোনাভাইরাস: দক্ষিণ আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব বাতিল
করোনাভাইরাস ইস্যুতে স্থগিত বঙ্গবন্ধু গেমস
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর সাধারণ সাবানও
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পরিবর্তন আনুন জীবনযাপনে
করোনাভাইরাসের প্রভাব, পুঁজিবাজারে বড় দরপতন চলছে

 

আইসোলেশন করোনা করোনাভাইরাস কোয়ারেনটাইন চীন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইনজুরিতে মৌসুম শেষ রদ্রির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২৮

সম্পর্কিত খবর