চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তকরণ শুরু
২৫ মার্চ ২০২০ ১৮:৫৪
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেজ- বিআইটিআইডিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নির্ণয়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি পাবার পর আগে থেকে মজুদ ১০০ করোনা শনাক্তকরণ কিট দিয়েই বুধবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহভাজনদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আরও কিট নিয়ে বিআইডিআইডির এক কর্মকর্তা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী।
হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছু কিট আমাদের আগে থেকেই ছিল। আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনের অপেক্ষা করছিলাম। অনুমোদনের পর সেই কিট দিয়েই নমুনা পরীক্ষা আমাদের ল্যাবে শুরু করেছি। এর আগে আমরা ১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছিলাম। পরীক্ষায় তাদের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। আরও কয়েকজনের নমুনা আমরা সংগ্রহ করে এখন ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা করছি। দুইদিন পর কতজনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এবং এর রেজাল্ট কি সেটা জানানো যাবে।’
ঢাকা থেকে আরও কিট আসছে জানিয়ে বিআইটিআইডির এই কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আমাদের গতকাল (মঙ্গলবার) বলা হয়েছিল, কিট নিয়ে যেতে। আমি একজন প্রতিনিধি পাঠিয়েছি। তিনি কিট নিয়ে আজ (বুধবার) দুপুরে রওনা দিয়েছেন। রাতের মধ্যে তিনি এসে পৌঁছবেন।’
গত ২১ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নির্ণয় শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন এবং কিট না থাকায় সেটি আটকে থাকে চারদিন।
এ অবস্থায় নানামুখী আশঙ্কার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি বিপ্লব বড়ুয়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এ বিষয়ে কথা বলেন। তাদের হস্তক্ষেপে অনুমোদন এবং কিট জটিলতার সমাধান হয়।
চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নির্ণয় শুরু হওয়াকে ‘শুভ উদ্যোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেরিতে হলেও এই কাজটা শুরু হয়েছে। এটা খুবই আশাপ্রদ। নানা কারণে চট্টগ্রাম করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে। দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করে আইসোলেশনে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করা এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে সহায়ক হবে।’
এদিকে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে হোম কোয়ারেনটাইনে থাকা বিদেশফেরত আটজন মেয়াদ শেষে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। তাদের কারও মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। বাকি ৯৬৫ জন এখনও হোম কোয়ারেনটাইনে আছেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই