উপার্জনহীনদের কাছে খাবার পৌঁছাতে হবে, ফের তাগাদা প্রধানমন্ত্রীর
৭ এপ্রিল ২০২০ ১২:২৮
ঢাকা: করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় যাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের কাছে খাবারসহ সরকারি সহায়তা পৌঁছে দিতে ফের তাগাদা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বাইরেও অনেকে বর্তমান পরিস্থিতিতে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তারা মুখ ফুটে সহায়তা চাইতে পারছেন না। তাদের জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে। তালিকা করে বাড়ি বাড়ি তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে হবে।
আরও পড়ুন- ‘সেবার মানসিকতা না থাকলে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া উচিত’
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৫টি জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স থেকে এ তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।
এর আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য খাদ্যে ভর্তুকি ও নগদ সহায়তার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। ৩১ মার্চ সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স থেকেও তিনি নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানান তিনি। সবশেষ রোববার করোনার ঘাত মোকাবিলায় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ঘোষণার সময়ও প্রধানমন্ত্রী সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে সব নিম্ন আয়ের মানুষদের দুর্ভোগ লাঘবে সব ধরনের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়েও একই আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- করোনা প্রতিরোধে নিয়োজিতরা আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার বিমা
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। দিন আনি দিন খাই অবস্থা যাদের, দিনমজুর যারা, রিকশা-ভ্যানচালক যারা, কিংবা যারা অল্প পুঁজিতে ছোট ব্যবসা করে খেত, যাদের উপার্জন ছিল সামান্য— তাদের এখন কাজ বন্ধ। তাদের উপার্জন বন্ধ। আমরা তাদের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১০ টাকার চাল বিতরণ করছি। আমাদের আরও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম রয়েছে। সেগুলো অব্যাহত থাকবে। তবে এসব সেবার আওতাভুক্ত যারা, তাদের বাইরেও অন্যদের সেবা দিতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা সেবার বাইরে যাদের উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে, এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তালিকা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় আছে, তারা তালিকা তৈরি করবে। প্রতিটি ইউনিয়নে ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি থাকবে। ভিজিডি-ভিজিএফ, বিভিন্ন ভাতার সুবিধাভোগী যে তালিকা আছে, তাদের বাইরে যারা আছে (রিকশাচালক, ভ্যানচালক, চায়ের দোকানদার, যাদের উপাজর্চন বন্ধ হয়েছে), তারা মুখ ফুটে বলতে পারবে না, সহায়তা নিতে আসবে না। তাদের ঘরে খাবার দিতে হবে। জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে মিলে এই তালিকা করতে হবে। এরপর তাদের ঘরে আমাদের খাবার পৌঁছানোর ব্যবস্থাটা করতে হবে।
আরও পড়ুন- করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পুরস্কার
জমি ফাঁকা রাখা যাবে না
করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিতে গুরুত্ব রাখার আহ্বান জানান। কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমেই ভবিষ্যতে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অনেকেই ঘরে বসে আছেন, কোনো কাজ কর্ম নেই। আমাদের আরেকটি কাজ করতে হবে। আমাদের মাটি উর্বর। কারও ঘরে এতটুকু মাটি যেন অনাবাদি না থাকে। যাই হোক না কেন, কিছু না কিছু ফসল ফলান। কৃষি মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়টি নিয়ে নির্দেশ দিয়েছি।
আরও পড়ুন- সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, করোনার কারণে সারাবিশ্বে ব্যাপক অভাব দেখা দেবে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যে মন্বন্তর দেখা গিয়েছিল, তেমন দুর্ভিক্ষ, খাদ্য সংকট আবারও দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের মতো যেসব দেশের সামর্থ্য আছে, আমরা ফসল ফলিয়ে সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফসল উৎপাদন করার মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারব। একইসঙ্গে অবস্থা বুঝে অন্যদেরও সহায়তা করতে পারব।
উপার্জনহীন টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি সহায়তা সহায়তা পৌঁছানোর নির্দেশ