গণস্বাস্থ্যের জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোটের প্রোডাকশনে বিদ্যুৎ গোলযোগ
১০ এপ্রিল ২০২০ ২২:২৬
ঢাকা: গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত পদ্ধতি ‘জি আর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ (GR Covid-19 Dot Blot)-এর প্রোডাকশন ইউনিটে বৈদ্যুতিক গোলযোগ ও কারিগরি ত্রুটির ঘটনা ঘটেছে। এতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে ‘জি আর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’র স্যাম্পল তৈরির কাজ।
ফলে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ ১১ এপ্রিল (শনিবার) বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিডিসি (CDC)- কে ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’র স্যাম্পল হস্তান্তর করতে পারছে না গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানে এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রকল্পটির কো-অর্ডিনেটর ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার জানান, জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’র স্যাম্পল হস্তান্তর স্থগিত করা হয়েছে। নতুন তারিখ শিগগিরই জানানো হবে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে পাঠানো বিজ্ঞপত্তিতে ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার জানিয়েছিলেন, শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ সরকারের কাছে ‘জি আর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’র স্যাম্পল হস্তান্তর করা হবে। একইসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিডিসি (CDC) কেউ নমুনা হস্তান্তর করবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
কিট নয়, কোভিড-১৯ শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পূর্ব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্যাম্পল হস্তান্তরের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রোডাকশন ইউনিটে ‘জি আর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’র স্যাম্পল তৈরির কাছ পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শনিবার হঠাৎ করে সেখানে বৈদ্যুতিক গোলযোগ দেখা দেয়। পাশাপাশি কারিগরি ত্রুটিও লক্ষ্য করেন প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা। এতে করে স্যাম্পল তৈরির কাজ ব্যাহত হয়।
সূত্রমতে, এই বৈদ্যুতিক গোলযোগ এবং কারিগরি ত্রুটি কারণে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আরেক ধাপ পিছিয়ে গেছে তাদের কর্মযজ্ঞ। ফলে প্রথম দিকে পুরো বিষয়টিকে সাবোট্যাজ মনে করেছিল গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। পরে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, এটা স্রেফ বৈদ্যুতিক গোলযোগ ও কারিগরি ত্রুটি।
জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইলেক্ট্রিক্যাল ও টেকনিক্যাল প্রবলেমের কারণে আমাদের প্রোডাকশন ইউনিট কাজ করছে না। আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। কেউ কেউ প্রথম দিকে বিষয়টিকে সাবোট্যাজ মনে করেছিল। পরে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এটি ইলেক্ট্রিক্যাল ও টেকনিক্যাল প্রোবলেন। যেহেতু আমরা প্রোডাকশন কমপ্লিট করতে পারিনি, তাই স্যাম্পল হস্তান্তর ক্যানসেল করেছি। আমাদের আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।’
‘কাজটা তো যেনতেনভাবে পাবলিকের সামনে উপস্থাপন করা যাবে না। সব কিছু ঠিকঠাক করে তারপর উপস্থাপন করতে হবে। বলতে পারো আমরা আরেক ধাপ পিছিয়ে গেলাম’— বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে গত ৫ এপ্রিল চীন থেকে রিএজেন্ট আসার পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা জি আর কোভিড-১৯ ডট ব্লোটের স্যাম্পল তৈরির কাজ শুরু করেন। ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী দিন/রাত সেখানে কাজ করছেন। পুরো কাজটা শেষ করে শনিবার ( ১১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় স্যাম্পলগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। তার মধ্যেই ঘটে গেল এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
আরও পড়ুন-
অবশেষে চীন থেকে এলো গণস্বাস্থ্যের রিএজেন্ট
করোনা শনাক্তে গণস্বাস্থ্যের পদ্ধতিকে সরকারের অনুমোদন
‘নিউ ইয়র্ক সায়েন্স জার্নালে’ গণস্বাস্থ্যের কোভিড-১৯ টেস্ট পদ্ধতি
স্যাম্পলসহ পুরো টিম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চাই: ড. বিজন
গণস্বাস্থ্যে কোভিড ১৯ টেস্ট: প্রথম দফার রিএজেন্টে ১ লাখ স্যাম্পল
‘গণস্বাস্থ্যের পদ্ধতিতে’ আগামী এক মাসে ১ লাখ লোকের করোনা টেস্ট!
করোনা করোনাভাইরাস গণস্বাস্থ্য জি আর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) স্যাম্পল