ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যর্থতায় এএসপি-ওসি প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন
১৯ এপ্রিল ২০২০ ১৩:২০
ঢাকা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সামাজিক দূরত্ব উপেক্ষা করে জানাজায় লোক সমাগমের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে প্রত্যাহারের পর এবার সার্কেল এএসপি মাসুদ রানাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
রোববার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা তাদের প্রত্যাহার ও তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানাজায় হাজার হাজার মানুষ, পুলিশ বলছে ‘কিছুই করার ছিল না’
তিনি বলেন, জানাজায় মানুষের ঢল নামার ঘটনার বিষয়ে ওসি কেন ব্যবস্থা নিতে পারলেন না। উনি কি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উনার সার্কেল এএসপি মাসুদ রানা এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। ব্যর্থতার জন্য দুজনকেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোহেল রানা আরও জানান, এ ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজিকে (প্রশাসন ও অর্থ) সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)। কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার (১৮ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় জুবায়ের আহমদ আনসারী প্রতিষ্ঠিত জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদরাসা প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও স্থানীয়রা সামাজিক দূরত্বের নিয়ম লঙ্ঘন করে জানাজা করে। জানাজা মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুইপাশে ছড়িয়ে যায়। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়।
এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়লেও পুলিশ বলছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের কিছু করার ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা আলেমদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। বলেছিলাম লোক সমাগম যেন না হয়। তারপরও লোক সমাগম হয়েছে।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘বিষয়টি সেনসেটিভ, তাই আমরা শক্ত ব্যবস্থা নিতে পারিনি। বিষয়টিতে অবশ্যই ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের খুব বেশি কিছু করার ছিল না।’
তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দাবি করেন, পুলিশ আগে থেকেই উদ্যোগী হওয়ায় জানাজায় লোক সমাগম কমেছে। তা না হলে মুসল্লি সমাগত হয়ত আরও বাড়ত।