জলাশয় সংস্কার প্রকল্প: ব্যয় বাড়ছে ১১৭ কোটি টাকা, মেয়াদ ১ বছর
২০ এপ্রিল ২০২০ ০৮:১৬
ঢাকা: জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ দ্বিতীয়বারের মতো বাড়ছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় এর মূল ব্যয় ছিল ২৫৪ কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২৯২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আর এখন দ্বিতীয় সংশাধনীর মাধ্যমে ১১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে ৪০৯ কোটি টাকা।
এদিকে প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন করতে না পারায় ফের নতুন করে এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। অনুমোদনের সময় ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পটি শেষ না হওয়ায় প্রথমবার এক বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। বাড়তি সময়ের মধ্যেও প্রকল্পটি শেষ করতে না পারায় এখন আবার নতুন করে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পটির মাধ্যমে টেকসই মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সরকারের দারিদ্র্য নিরসন প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করা হবে। এছাড়া পতিত জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বাড়িয়ে পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি মাছ চাষের উন্নত প্রশিক্ষণ, সম্প্রসারণ সেবা ও চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র মৎস্যজীবী, বেকার যুবক ও দুঃস্থ মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করা যেতে পারে।’
দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পে নতুন যেসব কার্যক্রম যুক্ত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- ৫৪০ হেক্টর পুকুর বা দীঘি পুনঃখনন, ১ হাজার ৪ হেক্টর খাল-বিল-মরা নদী-বরোপিঠ পুনঃখনন, ১০০টি পাইপ-কালভার্ট নির্মাণ, ২ হাজার ৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, মাছ ধরার ৮০টি জাল বিতরণ, ৪০টি আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতিসহ পানির পাম্প স্থাপন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শক নিয়োগ।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ২৩ জানুয়ারি প্রকল্পটি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। সেখানে দেওয়া বিভিন্ন সুপারিশ প্রতিপালন করায় প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি উন্নত হলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে।
এদিকে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে এবং দেশের ভরাট হয়ে যাওয়া জলাশয়গুলো খনন বা পুনঃখনন করে মাছ চাষের আওতায় আনতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথমদিকে পার্বত্য এলাকা বাদে অন্যান্য জেলার ২২৯টি উপজেলাকে প্রকল্পভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধনীতে নতুন করে আরও ১২০টি উপজেলাকে যোগ করার এখন ৮টি বিভাগের ৬১ জেলার ৩৪৯টি উপজেলা প্রকল্পভুক্ত হয়েছে। ফলে ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রয়োজন। তবে শুরু থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হয়েছে ১৮৫ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা, যা অনুমোদিত প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৬৩ দশকি ৬০ শতাংশ।
পরিকল্পনা কমিশন পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)