বৃষ্টি রেখে চলে গেল আম্পান
২১ মে ২০২০ ২১:১৩
ঢাকা: চোখ রাঙানি ছিল সুপার সাইক্লোন হিসেবে। তবে প্রায় শেষ দিকে এসে গতি হারায় আম্পান। দিকবদলও কিছুটা হয়। যে কারণে মূল তাণ্ডবের সাক্ষী হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। এর ঘণ্টা দুয়েক পর বুধবার (২০ মে) রাত ৮টার দিকে বাংলাদেশ যখন প্রবেশ করেছে, আম্পান তখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ হয়ে আম্পান এরপর যতই দেশের ভেতরে ঢুকেছে, ঝড়ের বেগ কমেছে। বিপরীতে বেড়েছে বৃষ্টি।
আবহাওয়া অধিদফতরের শেষ খবর বলছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান পুরোপুরি ‘মরে গেছে’। তবে যাওয়ার আগে রেখে গেছে নিম্নচাপ। আর তারই প্রভাবে আরও একদিন বৃষ্টি ঝরবে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আম্পান পরবর্তী নিম্নচাপটি এখন রাজশাহী অঞ্চলে অবস্থান করছে। এটি আজ মধ্যরাত থেকে সকালের মধ্যে সাগর থেকে বয়ে নিয়ে আসা সব মেঘ ঝরিয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে আগামীকাল দুপুর থেকে রোদের দেখাও পাওয়া যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, সক্রিয় থাকা নিম্নচাপটি একদিনের মধ্যেই তার সংগ্রহের সব বৃষ্টি ঝরিয়ে দেবে। সেক্ষেত্রে এটি লঘুচাপ হিসেবে পরিণতি পাবে। এজন্য সমুদ্র বন্দরগুলোতে আপাতত তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখানো হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে এখন ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সারারাত ধরেই চলতে পারে বৃষ্টিপাত। এর সঙ্গে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে— রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকাসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ২০৩ মিলিমিটার। এছাড়া ঢাকা বিভাগের মধ্যে টাঙ্গাইলে ১৩০, ময়মনসিংহে ১০৫, চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে মাইজদীকোটে ৯১, রাজশাহী বিভাগের মধ্যে ঈশ্বরদীতে ১৬০, তাড়াশে ১৫৫, বগুড়ায় ১০৩ ও খুলনার যশোরে ১১৮ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান গতকাল বুধবার (২০ মে) সন্ধ্যার আগে আগে ভারতের পশ্চিমবাংলা প্রদেশের দীঘা ও সাগরদ্বীপ এলাকায় আঘাত করে। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে এটি স্থলভাগ অতিক্রম করে। ঘূর্ণিঝড়ের একাংশ প্রবেশ করে বাংলাদেশেও। সাতক্ষীরা, খুলনাসহ দেশের পশ্চিম উপকূলে ৫ থেকে ৭ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস বয়ে যায়। রাত ১০টার দিকে জোয়ার শুরু হলে ১৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু জলোচ্ছ্বাস হয়। এতে প্লাবিত হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা। এসময় জোয়ার থাকার উপচে ওঠা পানি লোকালয়েও প্রবেশ করে।
আম্পান ঘূর্ণিঝড়টি ছিল প্রায় ৮০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সক্রিয়। এটিই ছিল এই শতকের প্রথম সুপার সাইক্লোন।
আম্পান আম্পান আপডেট ঘূর্ণিঝড় আম্পান নিম্নচাপ বাংলাদেশ অতিক্রম বৃষ্টিপাত লঘুচাপ