Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আ.লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন


৭ জুন ২০২০ ১২:২৯

ঢাকা: বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগ। রোববার সকাল ১০টার পরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আ খ ম জাহাঙ্গীর, শাহাবুদ্দিন ফরাজীসহ অন্যান্যরা।

আরও পড়ুন- বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা

১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬-দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়। এবার ঐতিহাসিক দিবসটি মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে জনসমাগম পরিহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এ কারণে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগ।

এদিকে ছয় দফা দিবসে সকল বীর শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে পরম করুণাময়ের নিকট প্রার্থনা করার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার ( ৫ জুন) দলটির দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসে ‘শতবর্ষে শত পুরস্কার’ শীর্ষক এক অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠিত হবে। মুজিব বর্ষ উদযাপনে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি উদ্যোগে অনলাইন প্লাটফর্ম দেশে ও দেশের বাইরে তে সকলে অংশ নিতে পারবেন। শনিবার বিকেলে ৭ই জুন ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠান ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এ সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। তার আগে জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র পক্ষ থেকে একটি অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত এটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও বিটিভি সহ সকল বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাসখন্দ চুক্তিকে কেন্দ্র করে লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সাবজেক্ট কমিটিতে ৬-দফা উত্থাপন করেন এবং পরের দিন সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে যাতে এটি স্থান পায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু এই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এ দাবির প্রতি আয়োজকপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি। তারা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে। প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু সম্মেলনে যোগ না দিয়ে লাহোরে অবস্থানকালে ৬-দফা উত্থাপন করেন। এতে পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন খবরের কাগজে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বলে চিহ্নিত করা হয়। পরে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু ১৩ মার্চ ৬-দফা এবং এ ব্যাপারে দলের অন্যান্য বিস্তারিত কর্মসূচি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদে পাস করিয়ে নেন।

আরও পড়ুন- ৬ দফার সঙ্গে তৈরি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের ছকও

৬-দফার মূল বক্তব্য ছিল প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয় ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে। পূর্ববাংলা ও পশ্চিম পাকিস্তানে দু’টি পৃথক ও সহজ বিনিময়যোগ্য মুদ্রা থাকবে। সরকারের কর ও শুল্ক ধার্য ও আদায় করার দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকাসহ দুই অঞ্চলের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার আলাদা হিসাব থাকবে এবং পূর্ববাংলার প্রতিরক্ষা ঝুঁকি কমানোর জন্য এখানে আধা-সামরিক বাহিনী গঠন ও নৌবাহিনীর সদর দফতর স্থাপনের দাবি জানানো হয়।

বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬-দফা দাবির মুখে পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খান বিচলিত হয়ে পড়েন। ৬-দফা কর্মসূচি জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমগ্র পূর্ববাংলা সফর করেন এবং ৬-দফাকে বাঙালির বাঁচার দাবি হিসেবে অভিহিত করেন।

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, জহুর আহমদ চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম চৌধুরী গণসংযোগে অংশ নেন। প্রতিটি জনসভায় বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করে। ফলে তৎকালীন শাসকরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যান্য নেতাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। যশোর, ময়মনসিংহ ও সিলেটসহ অন্যান্য কয়েকটি স্থানে ৬ দফার পক্ষে প্রচারকালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। পরবর্তী সময়ে ঐতিহাসিক ৬-দফাভিত্তিক নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনই ধাপে ধাপে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে পরিণত হয়। এ দাবির সপক্ষে বাঙালি জাতির সর্বাত্মক রায় ঘোষিত হয় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বাঙালিরা বিজয়ী করে। অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দলকে জনগণ বিজয়ী করলেও স্বৈরাচারী পাক শাসকরা বিজয়ী দলকে সরকার গঠন করতে না দিলে ফের বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।

আওয়ামী লীগ ছয় দফা টপ নিউজ বঙ্গবন্ধু


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর