মাস্ক-গ্লাভস পরে ‘নিউ নরমাল’ নির্বাচন সিঙ্গাপুরে
১০ জুলাই ২০২০ ২২:৩৭
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রভাবে অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেই ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে’ মাস্ক-গ্লাভস পরে সিঙ্গাপুরের ‘নিউ নরমাল’ সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। খবর রয়টার্স।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিঙ্গাপুরও এ পরিস্থিতিতে ভোট আয়োজন করে সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় নাম লেখাল।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতি যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সঙ্গিন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এ সবকিছুকে উপেক্ষা করেই শুক্রবার (১০ জুলাই) সারাদিন ভোটগ্রহণ চলেছে।
এর আগে, এপ্রিলে নির্বাচন হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায় এবং জুনে সার্বিয়ায় ভোট হয়েছে। দুই দেশেই ভোটাররা ক্ষমতাসীন দলকেই ক্ষমতায় ফিরিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে নাগরিকরা ভোট দিচ্ছেন। প্রত্যেকেই মুখে মাস্ক আর হাতে গ্লাভস পরা ছাড়াও সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলছেন। নিজেরাই নিজেদের আইডি কার্ড স্ক্যান করেছেন এবং ব্যালট পেপার নেওয়ার আগে হাত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করছেন।
প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, কেন্দ্রে আসা ভোটারদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছে নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষ। ভোটাররা কতক্ষণ ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারবেন তার সময়ও নির্দিষ্ট করাছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
এদিকে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রক্রিয়া পেরিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লেগে যাওয়ায়, বাড়ানো হয়েছে ভোটগ্রহণের সময়ও। স্থানীয় সময় রাত আটটায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, তা দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১১ জুলাই) ওই নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
অন্যদিকে, সিঙ্গাপুরের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে রেকর্ড সংখ্যক ১১ রাজনৈতিক দল।
১৯৬৫ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ক্ষমতায় থাকা পিপলস অ্যাকশন পার্টিই (পিএপি) পুনরায় নির্বাচনে জয়লাভ করবে বলে ধারণা করছেন নির্বাচনের পর্যবেক্ষকরা।
পিএপি এই নির্বাচনে জিতলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং আরেক মেয়াদে সিঙ্গাপুরের শাসনভার গ্রহণ করবেন।
প্রসঙ্গত, সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার জনক খ্যাত লি কুয়ান ইউয়ের ছেলে লি সিয়েন লুং ২০০৪ সাল থেকে দেশটির ক্ষমতায় আছেন।
এরই মধ্যে কয়েকবার ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলেও, দেশকে করোনাভাইরাস সংকট থেকে বের করে আনতে তিনি শেষবারের মতো এবার ক্ষমতায় আসতে চান – বলে তার সর্বশেষ বিবৃতিতে জানিয়েছেন।
অপরদিকে, ক্ষমতাসীন দলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে ওয়ার্কার্স পার্টি। এই বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে ভোট আয়োজন করে সরকার ওয়ার্কার্স পার্টির প্রচার বিঘ্নিত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি।
উল্লেখ করা যায় যে, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সিঙ্গাপুরই নভেল করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে। দেশটিতে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।